দত্তপুকুর: বছর ৬৫ বৃদ্ধার অর্ধনগ্ন হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ঘরের মধ্যে থেকে মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো দত্তপুকুর থানার কদম্বগাছির কয়ড়া শবতলা এলাকায়। মৃত বৃদ্ধার নাম সন্ধ্যা বিশ্বাস। তাঁর স্বামী পোস্ট অফিসে কর্মরত ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর পেনশনের টাকা নিয়ে কোনওরকমে সংসার চলত বৃদ্ধার। দুই ছেলে থাকলেও তাঁরা কেউই মায়ের সঙ্গে থাকতেন না। শবতলা এলাকার বাড়িতে একাই থাকতেন বৃদ্ধা। ছেলেরা মাঝেমাঝে এসে খোঁজখবর নিয়ে যেতেন। কিন্তু, আচমকা কে থাকে খুন করল তা বুঝতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা।
সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরে সন্ধ্যা বিশ্বাসের নাতি প্রথম তাঁর বাড়িতে আসেন। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পরেও কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে পিছন দিকের দরজায় উুঁকি দিতেই দেখেন ঘরের মধ্যে অর্ধনগ্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। হাত-পা বাঁধা রয়েছে। তখনই তিনি এলাকার অন্যান্য বাসিন্দাদের খবর দেন। খবর যায় পুলিশে। পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী এবং মৃতার পরিবারের দাবি, রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা এসে ওই বৃদ্ধাকে হাত-পা বেঁধে নৃশংসভাবে খুন করেছে।
এদিকে বৃদ্ধার সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা ছিল না বলেও জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, তারপরেও কেন এই খুন? যা নিয়েই কয়ড়া শিবতলা এলাকায় দানা বেঁধেছে রহস্য। ছেলে সুজিত বিশ্বাস এবং তার নাতনি মৌমিতা রায় জানান মঙ্গলবার রাতে শেষবার সন্ধ্যা বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হয় তাঁদের। তারপর আর কথা হয়নি। এরমধ্যেই মৃত্যুর ঘটনায় স্বভাবতই শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিশ্বাস পরিবারে।
এই প্রসঙ্গে বৃদ্ধার ছেলে সুজিত বিশ্বাস বলেন, “সকালবেলা আমি যখন কাজে বেরিয়েছি তখন আমার ছেলের কাছ থেকে একটা ফোন পাই। ছেলে বলে বাড়িতে এসে দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পর মায়ের কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। তখন পিছনের দরজা দিয়ে গিয়ে দেখে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মা মেঝেতে পড়ে রয়েছে। এমনকী গায়েও কোনও জামাকাপড় ছিল না। এটা খুন হিসাবেই আমাদের ধারনা”। কিন্তু, বয়স বাড়লেও কেন ছেলেদের সঙ্গে থাকতেন না সন্ধ্যা দেবী? প্রশ্নের উত্তরে সুজিত বাবুর দাবি, “মা একাই থাকত। মায়ের ভালো লাগত। আমি থাকতাম কদম্বগাছিতে। মাঝে মাঝে এসে মাকে দেখে যাই। আমার আর এক ভাই রয়েছে। ও বারো বিঘেতে থাকে। তবে আমার সঙ্গে আমার সম্পর্ক বারবরই ভালো ছিল”।