আরামবাগ: কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাঁধের কাজ করা হয়েছিল ২ বছর আগে। গত বন্যায় ফের বাঁধ ভেঙে যায়। আবারও সেচ দফতর থেকে বাঁধ সংস্কারের কাজে হাত লাগায়। আর সংস্কার শেষের মুখেই নিম্নচাপের কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই আবারও ধসে গেল শাল বোল্ডার। এলাকাটি খানাকুলের ঘোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রঘুনাথপুর গ্রাম। আর এখানেই দ্বারকেশ্বর নদের ভাঙা বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে।
শালবোল্ডার কাজ মাটিকে আটকে রাখা। শালবোল্ডার ধসে যাওয়ার বাঁধের মাটি ও ধসে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা সামনের বছর বন্যা হলে আবারও বাঁধ ভাঙবে। আর যা নিয়েই শুরু হয়েছে তর্ক বিতর্ক। এলাকার মানুষজন প্রশ্ন তুলেছে এইভাবে বাঁধ সংস্কার হলে কি বাঁধ টিকবে?
নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে দাবি করেছেন গ্রামবাসীরা। বাঁধ সংস্কারের ওয়ার্ক অর্ডার প্রকাশ্যে আনেনি সেচ দফতর আর এই নিয়ে তারা মুখ খুলছেন না বলে দাবি করেছেন স্থানীয় মানুষজন থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। দেওয়া হয়নি মঞ্জুর হওয়া অর্থ তালিকার বোর্ডও।
সেচ দফতরের এই সব অনৈতিক কাজে সরব হয়েছে স্থানীয় মানুষজন । এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আরামবাগ মহকুমা সেচ দফতরের আধিকারিকদের দিকেই আঙুল তুলেছেন গ্রামবাসীরা। এমনকি স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূল নেতা হায়দার আলি সেচ দফতরের দিকে আঙুল তুলেছেন।
যদিও এই বিষয়ে নিজেদের পক্ষে যুক্তি খাঁড়া করে সাফাই গেয়েছেন সেচ দফতরের আধিকারিক দীনবন্ধু ঘোষ। এক গ্রামবাসী বলেন, “এখানে কাজ করানো হচ্ছে। কিন্তু কাজের মতো কাজ হয়নি। প্রত্যেক বছর গ্রামের ছেলেমেয়ে এসে বাঁধ বাঁধি। বাঁধটা শুয়ে গিয়েছে। অল্প মাটি দিয়ে ঢালু করে চলে গিয়েছে। কর্মীদের বললে বলে, ওইভাবেই কাজ করতে বলা হয়েছে। এত টাকা আসছে, তাহলে কাজ হচ্ছে কই?”
আরেক গ্রামবাসী বলেন, “কাজটা ক’জন মন দিয়ে করে? পকেটেই যদি ভর্তি করতে চায়, তাহলে কাজ আর কী করে? প্রত্যেক বছর আমরা ছেলেমেয়েরা বাঁধ তৈরি করি। ভাল করে কাজ করছে না, তাই বাঁধ ভাঙছি। পাইলিং ঠিক মতো করছে না।”
এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে প্রধান হায়দার আলি বলেন, “২ বছর আগে ২ কোটি টাকার কাজ হয়েছএ রঘুনাথপুর এলাকায়। সেচ দফতর যে জায়গায় কাজ করেছিল, সেই জায়গাটা এবছর আবারও ভেঙে গিয়েছে। এবছর ১৮ লক্ষ টাকা ও ৭০ লক্ষ টাকা টেন্ডার পেয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি কাজ করার কয়েকদিনের মধ্যে বাঁধ ভেঙে বসে যাচ্ছে। নামের শালের বোল্ডার দেওয়া হয়েছে।”
সেচ দফতরের আরামবাগ এসডিও দীনবন্ধু ঘোষ বলেন, “গ্রামবাসীদের তরফে আমরা কিন্তু কোনও অভিযোগ পাইনি। আপনি মিডিয়ার তরফ থেকে বলছেন, আমি কিন্তু গ্রামে গ্রামে ঘুরি, আমাদের কিন্তু কিচ্ছু ওঁরা বলছেন না। বরং উল্টে বলছেন বাঁধের কাজ খুব ভালো হচ্ছে। বাঁধ অনেক শক্তপোক্ত মজবুত হচ্ছে। বাঁধ ভাঙেনি তো!”
আরও পড়ুন: Jalpaiguri Blood Bank: রক্তশূন্য ব্লাড ব্যাঙ্ক, সুযোগ বুঝে সক্রিয় দালাল চক্র!