বলাগড়: বিরল পাখির গায়ে রং করে বিক্রি করা হচ্ছিল হাটে। হাতে নাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর এরকম ১৫ টি পাখিকে উদ্ধার করা হল হুগলির বলাগড় থেকে। এক ব্যক্তি চিনতে পেরে গিয়ে খবর দেন বন দফতরে। এরপরই পাখিগুলিকে ঘিরে ভিড় জমে যায় বাজারে। বন দফতরের লোক এসে উদ্ধার করে নিয়ে যায় সেগুলিকে।
শুক্রবারের ঘটনা। হুগলির বলাগড়ের বাকুলিয়া ধোবাপাড়া পঞ্চায়েতের কুলিয়াপাড়া বাজার থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পাখিগুলিকে। সপ্তাহে তিন দিন করে ওই জায়গায় হাট বসে। এলাকার অনেক কৃষক তাঁদের ফসল বিক্রি করতে আসেন ওই হাটে। শুক্রবারও তেমনই বসেছিল হাট। আর সেখানে অনেকেরই চোখে পড়ে খাঁচা বন্দি একাধিক পাখি। দরদামও করেন অনেকে।
আচমকা বিষয়টা নজরে পড়ে যায় সমরেশ মল্লিক নামে এক ব্যক্তির। ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি করেন সমরেশ। নানা ধরনের পাখির ছবি তোলা তাঁর নেশা। তাই তাঁর চোখে সহজেই ধরা পড়ে যায় বিষয়টা। সমরেশ পাখিগুলোকে খুব কাছ থেকে দেখে বোঝার চেষ্টা করেন। তখনই বুঝতে পারেন আসলে ওগুলো মুনিয়া। গায়ে রঙ করে বিক্রি করা হচ্ছে। সাধারণত মুনিয়া পাখির রং হয় লাল- সাদা। ওই ব্যক্তি বুঝতে পারেন সেই সাদা রঙের গায়ে লেপে দেওয়া হয়েছে কেমিক্যাল মেশানো রং। কোনওটিকে কমলা, আবার কোনওটার গায়ে সবুজ রং করা হয়েছে।
পাখি বিক্রেতাকে জিজ্ঞাসা করাতে তিনি জানান, তিনি পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা। সাতগাছিয়ার হাট থেকে তিনি পাখিগুলি কিনে এনেছেন। হাটে তখন পাখি দেখতে পথচলতি মানুষের ভিড় জমে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সমরেশ বন দফতরে খবর দেন। চুঁচুড়া থেকে ওই হাটে যান বন দফতরের লোক। তাঁরাই গিয়ে পাখি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বনদফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, টিয়া, ময়না, চন্দনা বা মুনিয়া- এই ধরনের পাখি বিক্রি করা বেআইনি। ক্রমশ বিরল হয়ে যাওয়ায় পাখিগুলি বিক্রি করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই নিয়ে প্রচার হওয়া সত্ত্বেও লুকিয়ে চুরিয়ে এ ভাবে পাখি বেচাকেনা চলছে বলে জানান তিনি।
সমরেশ মল্লিক বলেন, ‘পাখিগুলো খুবই ছোট। কয়েকটি বাচ্চা ছিল।’ বন দফতর জানিয়েছে, চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করার পর পাখিগুলিকে ছেড়ে দেওয়া হবে প্রাকৃতিক পরিবেশে।