পাণ্ডুয়া: অসুস্থ প্রৌঢ়কে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিল পরিবার। তারপর থেকে আর খোঁজ নেয়নি। বুধবার সকালে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে মৃত্যু হয় চন্দ্রজিৎ অধিকারী নামে বছর বাষট্টির ওই প্রৌঢ়র। কিন্তু, কয়েকঘণ্টা কেটে গেলেও দেখা মেলেনি মৃতের পরিজনদের। এদিকে, মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। অন্য রোগীদের পরিজনরা হইচই শুরু করেন। শেষপর্যন্ত পুলিশের সহযোগিতায় মৃতদেহ পাঠানো হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের মর্গে। কিন্তু, কেন মৃতদেহ নিতে এলেন না পরিজনরা, সেই প্রশ্ন উঠছে। হাসপাতালের বক্তব্য, ওই প্রৌঢ়র মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে ও জামাইকে ফোন করা হয়েছিল।
হাসপাতালের তরফে জানা গিয়েছে, ত্রিবেণী শান্তি কলোনির বাসিন্দা চন্দ্রজিৎ অধিকারীকে গত ২২ ডিসেম্বর ভর্তি করে তাঁর পরিবার। ওই প্রৌঢ়র শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। পরিবারের লোকজন ভর্তি করে দিয়ে চলে যায়। আর খোঁজ নিতে আসত না। এদিন সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই থেকে হাসপাতালের বেডেই পড়ে থাকে মৃতদেহ। মৃত্যুর পর বেশ কয়েকঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ায় দেহে পচন ধরতে শুরু করে। দুর্গন্ধও ছড়ায়।
শান্তনু আইচ নামে এক রোগীকে দেখা যায়, বেড ছেড়ে হাসপাতালের বাইরে রয়েছেন। তিনি বলেন, “দীর্ঘক্ষণ হয়েছে মৃত্যু হয়েছে এক রোগীর। তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়নি। দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। ওয়ার্ডে থাকা যাচ্ছে না। তাই বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছি।”
এক রোগীর আত্মীয় কল্পনা দত্ত বলেন, গন্ধে চিকিৎসা করাতে এসে আরও খারাপ হয়ে যাবে যেকোনও রোগী। আমরাও ওয়ার্ডে থাকতে পারিনি। অনেক বার বলা হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এভাবে রোগীরা থাকতে পারে?
পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ মঞ্জুর আলম জানান, ওই প্রৌঢ়কে ভর্তি করে দিয়ে যাওয়ার পর আর সে ভাবে খোঁজ খবর নেয়নি পরিবার। হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীরাই দেখাশোনা করেছেন। বুধবার সকালে স্বাভাবিক মৃত্যু হয় প্রৌঢ়র। তাঁর ছেলে-জামাইকে ফোন করা হয়েছিল। তাঁরা কেউ আসেননি। পরে ফোনও বন্ধ করে দেন। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে দেহ চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।