হুগলি : পানীয় জল, রাস্তাঘাট-সহ নানা সমস্যার কথা শুনতে পাড়ায় পাড়ায় হাজির পুলিশ (Police) কর্মীরা। শুনলেন মানুষের অভাব অভিযোগের কথা। সমাধানের আশ্বাসও দিলেন। মানুষ ও পুলিশের সম্পর্ক সুদৃঢ় করাই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন হুগলি জেলার গ্রামীণ পুলিশ সুপার। এদিকে এ নিয়ে ইতিমধ্যেই জোরদার রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে জেলাজুড়ে। প্রশাসনকে দলের কাজে ব্যবহার করছে তৃণমূল, কটাক্ষ গেরুয়া শিবিরের। এতে দোষের কিছু নেই, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ জনসাধারণের সঙ্গে সম্পর্ক সুদূঢ় করতে এই কাজ অনেকদিন শুরু হয়েছে, দাবি তৃণমূলের (Trinamool Congress)।
সূত্রের খবর, এদিন পোলবা থানার অফিসার ইনচার্জ অরূপ কুমার মণ্ডল তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে পোলবা থানা এলাকার মহানাদ, সুগন্ধা, আমনান পঞ্চায়েত এলাকায় ঘোরেন। আমনানের বীরেন্দ্রনগর গ্রামে গিয়ে সরাসরি মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সমস্যার কথা জানতে চান। রাস্তাঘাট, পানীয় জল-সহ অন্যান্য পরিষেবা ঠিকঠাক আছে কি না তাও গ্রামবাসীদের মুখ থেকে জানতে চান পুলিশ আধিকারিকরা। বিডিওতে কিংবা থানাতে গেলে তাদের সঙ্গে যথাযথ ব্যবহার করা হয় কি না বা তাঁদের কথা শোনা হয় কি না তাও জানতে চান পোলবা থানার অফিসাররা। গ্ৰামবাসীদের কাছ থেকে সমস্যার কথা শুনে তা প্রতিকারেরও আশ্বাস দেওয়া হয় পুলিশের তরফে।
মানুষের সমস্যার কথা শুনতে পুলিশের এই ভূমিকায় কিন্তু কিছুটা হলেও অবাক হয়েছেন গ্রামবাসীরা। বীরেন্দ্রনগরের বাসিন্দা রাজকুমার সাঁতরা বলেন, “এটা দেখে ভাল লাগছে যে এই প্রথম কোন প্রশাসনের লোক এলাকায় এসে মানুষের খবর নিচ্ছে। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি, এখানে পিচের রাস্তা হলে ভাল হয়। নদীর সেতুটা চওড়া হলেও উপকার হয়। ওনারা আশ্বাস দিয়েছেন। বলেছেন বিষয়টা দেখবেন।”
হুগলির গ্ৰামীণ পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, “মানুষের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে কয়েকদিন ধরেই এই ধরনের প্রয়াস চলছে বিভিন্ন থানায়। মানুষের সঙ্গে কথা বলার পর যে বিষয়গুলি জানতে পারা গিয়েছে সেগুলি জেলা শাসককে জানানো হবে।” তবে এ নিয়ে তোপ দাগতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির হুগলি সংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউয়ের অভিযোগ, “পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে দিয়ে জনগণের মধ্যে একটা ভয় সৃষ্টি করাতে চাইছে এরা। পুলিশের কাজ হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা। কিন্তু তৃণমূল এতটাই দুর্নীতি করে ফেলেছে তারা এখন মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছে না। এখন পুলিশ প্রশাসনকে পাঠাচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনকে দলের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র ধিক্কার জানাই।”
তবে এতে দোষের কিছু দেখছেন না হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূল নেতা মনোজ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “এতে দোষের কিছু নেই। পুলিশকে মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করতে হবে এ কথা মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলেছেন। সরকারের লক্ষ্য পুলিশ-প্রশাসনের মাধ্যমেও সরকারি পরিষেবা মানুষের কাছে পৌঁছনো। বিরোধীরা কি বলল তাতে কিছু যায় আসে না। আমরা উন্নয়নের কাজ করছি। পুলিশও প্রশাসনের অঙ্গ হিসাবে সেই কাজ করছে।”