চুঁচুড়া : প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছে ইডি। বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন তিনি। শুধু পার্থ নয়, শাসক দলের নেতাদের সম্পত্তির হিসেব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আদালতেও। এরই মধ্যে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য ঘিরে বাড়ল বিতর্ক। তিনি বললেন, ‘হিসেব বেশি হয়ে গেলে ইডি চলে আসবে বাড়িতে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেছেন সুকান্ত। রবিবার হুগলির চুঁচুড়ায় একটি সভায় গিয়ে এমন মন্তব্য করেন সুকান্ত মজুমদার। তৃণমূলের দাবি, সুকান্তর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, বিজেপি ইডি-সিবিআই দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে।
রবিবার চুঁচুড়ায় একটি প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেন সুকান্ত। মিছিল শেষে চুঁচুড়ার ঘরির মোড়ে একটি সভায় যোগ দেন সাংসদ। সেখানেই চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে দেখা যায় তাঁকে। তিনি বলেন, ‘মঞ্চ থেকে দাঁড়িয়ে বলছি, অসিত চোর, তপন চোর। তৃণমূলের সবাই চোর। চুরি করুন অসুবিধা নেই। হিসেবটা যখন বেশি হয়ে যাবে, তখন ইডি চলে আসবে বাড়িতে। আমরাই পাঠিয়ে দেব।’
সোমবারই তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করেছে সিবিআই। সেই প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, ‘যেতে তো তোমাকে হবেই। আমি কথা দিচ্ছি, এমন আতিথেয়তা করবে ইডি, তোমার আর ফিরতে ইচ্ছে করবে না।’ তাঁর দাবি, একজন নেতা জেলে গিয়েছেন, আরও অনেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
তবে মোদী-মমতার সাক্ষাৎ নিয়ে সিপিএম যে সেটিং তত্ত্ব দিচ্ছে, তা নস্যাৎ করে সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘১৫ দিন অপেক্ষা করুন, কী সেটিং হয়েছে, তা দেখতে পাবেন।’ তাঁর দাবি, একজন মুখ্যমন্ত্রী দেখা করতে চাইলে, প্রধানমন্ত্রীকে সময় দিতেই হয়। সিপিএম ও কংগ্রেসকে বার্তা দিয়ে বিজেপি নেতা আরও বলেন, ‘আসল সেটিং তো আপনাদের সঙ্গে।’ বিজেপির ২০০ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘তাঁদের রক্তের হিসেব যতদিন না পাব ততদিন লড়াই চলবে।’
কারা ‘চুরি’ করেছেন, অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে সেই নামগুলি আরও একবার মনে করিয়ে দেবেন বলে দাবি করেছেন সুকান্ত। মঙ্গলবার গুরুত্বপূর্ণ বিল থাকায় দিল্লি যাবেন বলে জানিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি জানিয়েছেন, দিল্লি গিয়ে অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। সুকান্ত বলেন, ‘সব বৃত্তান্ত জানাব। যাতে তাঁর মাথাতেও এই নামগুলো ঢুকে যায়। আর তিনি যখন চাবি ঘোরাবেন তখন দেখবেন একটার পর একটা অপারেশন শুরু হয়ে যাবে। চিন্তা নেই সময় এসেছে চোরেদের জেলে ঢোকানোর।’
এই প্রসঙ্গে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছিলেন, সেটাই ঠিক। ইডি, সিবিআই দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বিজেপি।