তারকেশ্বর: কোনও আলুর আকৃতি পুতুলের মতো, কোনওটা হাতি, কোনওটা ঘোড়ার আকৃতির। আলু তোলার পর তো তা দেখে অবাক আলু চাষিরা। কিনতে চাইছেন না ব্যবসায়ীরা। ফাঁপরে পড়েছেন চাষিরা। চাষিরা বলছেন, নকল আলু বীজের কারণেই এই সমস্যা। তার ফলে যে আলু ফলেছে তা মুখে তোলারও অযোগ্য। ফলে বড় ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে তারকেশ্বর ব্লকের কয়েকশো চাষি। তাঁরা বলছেন, লাভ তো দূরের কথা, চাষের খরচই উঠবে না! এই অবস্থায় আত্মহত্যা ছাড়া উপায় থাকবে না।
আরামবাগ থেকে ধনেখালি, গুড়াপ থেকে তারকেশ্বর, হুগলির নানা প্রান্তে জোরকদমে চলছে আলু তোলার কাজ। কিন্তু, মাঠে গিয়ে মাথায় হাত চাষিদের। চাষের একটা বড় অংশের অভিযোগ চাঁপাডাঙা এলাকার আলু বীজ ব্যবসায়ী প্রভাস দুলুইয়ের বিরুদ্ধে। চাষিদের অভিযোগ, ওই ব্যবসায়ী তাঁদের নকল আলু বীজ গছিয়ে দিয়েছেন। তাতেই হয়েছে বড় ক্ষতি। যে আলু ফলেছে তা খাওয়ার উপযুক্ত নয় বলেও অভিযোগ। একইসঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আলু বসানোর পর থেকেই চাষবাসে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। লেগেছে ধসা। তাতেও ফলন অনেকটা কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে আলু চাষের শুরুতে নকল আলু বীজের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে মাঠে নামে জেলা প্রশাসন। একাধিক আলু বীজ ব্যবসায়ীর গোডাউনের হানা দেন প্রশাসনের কর্তারা। কিন্তু, তারপরেও কেন ঠেকানো গেল না এই নকল আলু বীজের কারবার? উঠছে প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই প্রভাস দুলুইয়ের বিরুদ্ধে ব্লক কৃষি দফতরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। এ বিষয়ে প্রভাসের বাড়িতে গিয়েও তাঁর দেখা মেলেনি।
তবে চাষিদের ক্ষতি যে হয়েছে তা স্বীকার করে নিচ্ছেন চাঁপাডাঙার আলু বীজ ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক দেবব্রত দুলুই। যে কোম্পানির বীজ তাঁদের জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। চাষিদের পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছেন।
তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় জানাচ্ছেন, চাষিরা ইতিমধ্যেই তাঁর কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আলু বীজ সংস্থা ক্ষতিপূরণ না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।