Dhaniakhali: শিরদাঁড়ায় ঠান্ডা স্রোত, শরীরে কাঁপুনি, এই রাস্তায় নাকি চলে ‘ভূতের খেলা’

Mar 19, 2024 | 8:40 PM

Dhaniakhali: আগে এই রাস্তা কাঁচা থাকলেও সম্প্রতি ঢালাই হয়েছে। মূল সড়ক পিচের হলেও গ্রামের ভিতর দিয়ে চলে যাওয়া এই রাস্তা দিয়ে সহজেই আশপাশের ১০-১২ টা গ্রাম থেকে ধনেখালির মূল বাজারে চলে যাওয়া যায়।

Dhaniakhali: শিরদাঁড়ায় ঠান্ডা স্রোত, শরীরে কাঁপুনি, এই রাস্তায় নাকি চলে ভূতের খেলা
প্রতীকী ছবি। গ্রাফিক্স- শুভ্রনীল দে
Image Credit source: TV-9 Bangla

Follow Us

ধনেখালি: জনমানবহীন রাতে রাস্তা দিয়ে বাইক নিয়ে যেতে যেতে শরীরে আচমকা যেন একটা অন্যরকম অনুভূতি। কখনও কাঁপুনি কখনও আবার একটু হালকা নিস্তেজ ভাব। কিছু বুঝে ওঠার আগে হটাৎ বাইকে কেমন যেন ঘরঘর শব্দ। কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে যেই না ভাবতে শুরু করেছেন তখনই দেখা গেল গোটা বাইক জুড়ে কিসের যেন একটা শিহরণ। মনে চাপা ভয় নিয়ে দুরুদুরু বুকে রাস্তা পার হলেও শিরদাঁড়া দিয়ে ততক্ষনে ঠান্ডা স্রোত বইতে শুরু করে দিয়েছে। একবার ভুল করে গেলেও দ্বিতীয়বার আর কেউ ওই ভূতুড়ে রাস্তায় পা রাখতে চান না। অত্যন্ত প্রয়োজনে দিনে গেলেও রাতে নৈব নৈব চ। 

এমনই এক রাস্তা রয়েছে হুগলির ধনেখালির কনুইবাকা – আকিলপুর গ্রামের সংযোগস্থলে। আগে এই রাস্তা কাঁচা থাকলেও সম্প্রতি ঢালাই হয়েছে। মূল সড়ক পিচের হলেও গ্রামের ভিতর দিয়ে চলে যাওয়া এই রাস্তা দিয়ে সহজেই আশপাশের ১০-১২ টা গ্রাম থেকে ধনেখালির মূল বাজারে চলে যাওয়া যায়। কিন্তু, সম্প্রতি এই এই রাস্তার উপর দিয়েই চলে গিয়েছে বিদ্যুতের হাইটেনশন লাইন। বসেছে বিশাল বিশাল বিদ্যুতের খুঁটি। তা দিয়েই এলাকার পাওয়ার স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাচ্ছে আশপাশের জেলায়। এলকার লোকজন বলছেন ওই কাজের পর থেকেই যেন এলাকায় আরও বেড়ে গেছে এইসব ভূতুড়ে কান্ড-কারখানা। 

কী বলছে এলাকার লোকজন? 

এলাকার এক বাসিন্দা বলছেন, অনেক দিন থেকেই এটা হচ্ছে। শুরুতে খুবই ভয় লাগত। এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতও অনেক কমে গিয়েছিল। লোকে ভয়ে চলাচল করতে চাইত না। একান্ত প্রয়োজন এ কেউ গেলেও তারাও একই অভিজ্ঞতা হত। শরীরে আচমকা একটা ঝিমুনি এসে যেত। মনে হত কে যেন উপর থেকে টানছে। একটা কাঁপুনিও অনুভূত হত। সঙ্গে বাইক বা লোহার কিছু থাকলে আরও স্পট বোঝা যায় সেই কাঁপুনি। 

এলাকার আর এক বাসিন্দা বলছেন, আমরা তো ছোট থেকে শুনেছি সঙ্গে লোহা রাখলে ভূত আসে না। কিন্তু এখানে তো লোহা থাকলেই কে যেন টেনে ধরে। ভয় তো খুবই লাগে। তবে এখন খানিকটা গা সওয়া হয়ে গেছে। ভূত আছে কি জানি না! তবে এখনও কারও বড় কোনও ক্ষতি হয়নি। 

এলাকার লোকজনের কথা শুনে তো খানিকটা হেসেই ফেললেন স্থানীয় ইলেকট্রিশিয়ান শ্রীকান্ত মালিক। তাঁর দাবি, ওসব ভূতের গল্প সবই রটনা। ওসব কিছুই নেই। তিনি বলছেন, ওই হাইটেনশন লাইনের জন্য এমনটা হয়। যেহেতু খুব হাইভোলটের বিদ্যুৎ ওখান দিয়ে গিয়েছে তাই ওই এলকার কিছু অংশে একটা ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয়ে থাকে। ওই চুম্বকীয় ক্ষেত্র দিয়ে লোহা বা জাতীয় কিছু নিয়ে গেলে তাতে কিছুটা বিদ্যুতের সংস্পর্শে আসে। বাইকে থাকলে বেশি বোঝা যায়। কারণ, বাইকের ব্রেক বা তেলের ট্যাংকের সঙ্গে শরীর ছুঁয়ে থাকে। রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় সঙ্গে লোহার কোনও জিনিস থাকলে শরীরেও অল্প সময়ের জন্য বিদ্যুৎ প্রবাহ বোঝা যায়।

কমছে জমির দাম

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ওই শক্তিশালী তারের নিচে না দাড়িয়ে থাকাই ভাল। তারগুলি সাধারণত প্রচণ্ড উচ্চ ভোল্টেজ বহন করে, যার ফলে গাড়ি এবং তারের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ থাকলে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যু হতে পারে। অনেক সময় গাড়িতে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটে। তাই যে সমস্ত এলাকা দিয়ে এই ধরনের উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন তার গিয়েছে সে সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করা উচিৎ। অন্যদিকে এলাকার লোকজন বলছেন, তাদের অনেকের জমির উপর দিয়েই এই তার গিয়েছে। ফলে আগের থেকে বহুলাংশে কমে গিয়েছে জমির দাম।

Next Article