হুগলি: গোটা পাড়ায় প্রকট হয়ে উঠেছিল চামড়া পোড়ার গন্ধ! প্রতিবেশীরা সেই গন্ধের উৎস সন্ধান করছিলেন। তখনই দেখেন মাইতি বাড়ির একটি ঘর থেকে বের হচ্ছে কালো ধোঁয়া। প্রতিবেশীরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। কিন্তু তারপরও বাড়ির ভিতর থেকে কোনও সাড়াশব্দ মিলছিল না। বিপদ আঁচ করতে পেরে প্রথমে পুলিশকে প্রথম খবর দেন তাঁরা। তবে পুলিশ আসার আগেই ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে হতভম্ব হয়ে যান। ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে বাড়ির মহিলা ও তাঁর মেয়ের দগ্ধ কালো শরীর। আর পাশের ঘরে সিলিং ফ্যানে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছেন ছেলে। ঘটনায় ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙ্গা পঞ্চায়েতের বিশ্বাস পাড়া এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম বিজলি মাইতি (৫৪), দিদি সুজাতা মাইতি (৩১) ও শুভম মাইতি (২৭)। পুুলিশ তিন জনের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মা দিদিকে প্রথমে আগুনে পুড়িয়ে মেরে আত্মঘাতী হয়েছেন ছেলে। তবে কী কারণে এই ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে তারকেশ্বর থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, শুভমের বাবা পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। শুভম নিজে কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। দু’বছর ধরে কলকাতাতেই থাকতেন তিনি। কিন্তু মাস দুয়েক আগে বাড়ি ফিরেছিলেন। পরিবারের অশান্তির কারণেই তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন বলে জানান।
শুভমের দিদিও পড়াশোনায় ভাল ছিলেন। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে বলতে শুভমই ছিলেন। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মাইতি পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল বলে জানতেন। তবে ঠিক কী নিয়ে অশান্তি সেটা জানতেন না তাঁরা। সোমবার সকাল আটটা নাগাদ চামড়া পোড়া গন্ধ বের হচ্ছিল।
পরিবারের এক আত্মীয় বলেন, “আমরা তো কিছুই বুঝতে পারছি না। এত ভয়ঙ্কর ঘটনা। ঘরের ভিতরে লাইট জ্বলছিল। আমার মাসির ছেলে দরজা টপকে দরজা ভাঙে শাবল দিয়ে। তারপর পুলিশে খবর দিই। ওদের নিজেদের মধ্যেই অশান্তি চলছিল। বাইরের কেউ জানতেন না।”