হুগলি: অনেকটা রাত, তখন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘরের ভিতর টিম টিম করে জ্বলছে জিরো পাওয়ারের বাল্ব। আর কয়েকজন মানুষ ঘোরাফেরা করছেন। দেখতে পেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। কেবল এই প্রথম নয়, এর আগেও বেশ কয়েকবার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘরের ভিতর অচেনা লোক ঘুরতে দেখা গিয়েছে। দেখেই সন্দেহ হয়। আর তাতে বাইরে থেকে গিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। শাসকদলের মদতপুষ্ট বলেই কি রাতের অন্ধকারে কাজ? উঠেছে প্রশ্ন। এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির গোঘাটের নবাসন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় গোঘাট থানার পুলিশ। আটক থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর আগে গোঘাটের নবাসন উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভবন সংস্কারের জন্য একটি টেন্ডার পেয়েছিলেন ঠিকাদার। পুজোর মধ্যেই তিনি কাজ শুরু করেছিলেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ভবন সংস্কার করা হচ্ছিল। প্রতিবাদে কাজ বন্ধ করে দেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, হঠাৎই বুধবার রাতে তাঁরা কিছু শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন। শব্দের উৎস সন্ধানে তাঁরা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে আসেন। দেখেন ভিতরে কয়েকজন লোক কাজ করছেন। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন সংস্কার করতে হলে তা দিনে হোক, রাতে কেন হবে? প্রতিবাদে তাঁরা ভিতরে ঠিকাকর্মীদের রেখেই বাইরে থেকে তালা বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় গোঘাট থানার পুলিশ। বিশাল বাহিনী গিয়ে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে আটকে থাকা ঠিকাদারের লোকজনকে বার করে আনেন। তাঁদের আটক করে গোঘাট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শাসকদলের ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার হওয়াতেই রাতের অন্ধকারে কাজ করছেন।
এপ্রসঙ্গে অভিযুক্ত ঠিকাদার দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়, “কাজের জন্য এসেছিলাম। নেট সিমেন্ট হচ্ছিল। অফিস থেকেই চাবি পেয়েছিলাম। কেবল ২০০ স্কোয়ার ফিট নেট সিমেন্ট হচ্ছিল। কেন বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা, তা ওঁরাই জানেন।”
গোঘাট ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বিজয় রায় বলেন, “আমরা শুনেছি, পুলিশকে বলেছি যথাযথ ব্যবস্থা নিতে। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাতে কাজ করুক কিংবা খারাপ সামগ্রী দিয়ে কাজ করুক, তা কখনই কাম্য নয়।”