হুগলি: স্কুলে নিয়মিত যেতেন। পাড়াতেও ভাল ছেলে হিসাবে পরিচিত। ছাত্রদেরও পড়াশোনায় সাহায্য করতেন। শনিবারও স্কুলে যান। মাঝে রবিবার ছুটির দিন বাড়িতে ছিলেন। সোমবার সকালে হঠাৎই ঘর থেকে উদ্ধার হল তাঁর ঝুলন্ত দেহ। ঘরে একটি ব্ল্যাক বোর্ড ছিল। অঙ্ক কষতেন তাতে। তাতে লেখা ছিল একটাই লাইন। ‘বাবা মা ক্ষমা করে দিও…’ আর কিচ্ছু লেখেননি তিনি। অঙ্কের স্যরের মর্মান্তিক এই পরিণতিতে হতবাক সকলেই। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির চুঁচুড়ার কোদালিয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সুকান্তনগরে। মৃতের নাম ভক্তদাস অধিকারী(৩৬)। বাড়ি চুঁচুড়া থানার কোদালিয়া ১নং পঞ্চায়েতের সুকান্তনগরে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভক্তদাস দাদপুরের বাবনান হাইস্কুলে অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে চাকরিতে যোগদান করেন। জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে নিজের ঘরে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘরে একটি বোর্ডে বাবা মার উদ্দেশে লেখা ছিল, “মৃত্যুর জন্য কেউ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কেউ জড়িত নন।” খবর পেয়ে মৃতেদহ উদ্ধার করে চুঁচুড়া থানার পুলিশ। দেহটি ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পাঠানো হয়েছে। শিক্ষকের পরিবার, ছেলের মৃত্যু নিয়ে কিছু বলতে চায়নি। শিক্ষকের আত্মীয় মনোতোষ অধিকারী বলেন, “কেন করল, কিছুই বুঝতে পারা যায় নি। একটা সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। কেন লিখল তা জানি না। বাবা মার এক মাত্র ছেলে। বাড়িতে কোনও ঝগড়া অশান্তি ছিল না। কোনও অবসাদও ছিল না। চাকরির ক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা ছিল না। বৈধ চাকরি ছিল।”
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বলরাম অধিকারী বলেন,”খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। খুব ভদ্র শান্ত ছেলে ছিল ভক্ত। স্কুলে চাকরি করত। আমি সকালে খবর পেয়ে বাড়িতে যাই। দেখছি বিষয়টা।”
বাবনান স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে ২৮ নভেম্বর অঙ্কের শিক্ষক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন ভক্তদাস অধিকারী। নিয়মিত স্কুলে যেতেন তিনি। মঙ্গলবার হুগলি ডিআই অফিসে তাঁর ‘ডকুমেন্টস ভেরিফিকেশন’ ছিল। এটিকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করছে পুলিশ। তবে এর পিছনে কী কারণ থাকতে পারে, তা নিয়ে একাধিক জল্পনা রয়েছে।