হুগলি: গঙ্গার ঘাটে নেমেছিলেন। তবে তার আগেই হল বিপত্তি। বিকেলের মধ্যে হঠাৎই কালো করে এল আকাশ। উঠল ঝড়। সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। তখনই দুর্ঘটনা। ঝড়ের মধ্যে গঙ্গায় মাছ ধরার জাল ফেলতে গিয়ে বিপত্তি। উদ্ধার দুই, নিখোঁজ এক।
সূত্রের খবর, শনিবার বিকেলে কোন্নগরের বাটা ঘাট থেকে বেশ কয়েকজন মৎস্যজীবী গঙ্গায় মাছ ধরতে যান। সেই সময় হঠাৎ কালবৈশাখীর ঝড় ওঠে। বাকি মাঝিরা ফিরে আসতে পারলেও জয়ন্ত কংসবণিক, দুলাল দাস সহ আরও একজন তাঁদের নৌকা নিয়ে ফিরে আসতে পারেননি।
জানা গিয়েছে, নিখোঁজ দুলাল দাস (৬০) গত ফেব্রুয়ারি মাসে মুম্বই থেকে ফেরেন। তিনি মুম্বইয়ের একটি জুট মিলে কাজ করতেন। বেশ কয়েকমাস ধরে বাড়িতে থাকায় প্রতিবেশী জয়ন্ত কংসবণিকের সঙ্গে গঙ্গায় জাল ফেলতে যাচ্ছিলেন শখে। শনিবারও সেই মতো বেরিয়েছিলেন। তবে মাঝ গঙ্গায় জাল ফেলার সময় হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে তাঁদের নৌকা। জয়ন্ত, দুলাল ও তাঁদের আরও এক সঙ্গী তিন জনেই গঙ্গায় পড়ে যান সেই সময়। তিন জনেই সাঁতরে পাড়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। জয়ন্ত ও তাঁর এক সঙ্গী প্রায় আধ ঘণ্টার চেষ্টায় সাঁতরে উত্তর ২৪ পরগনার বারো মন্দিরঘাটে গিয়ে ওঠেন। তবে কিছুটা সাঁতারের পর আর দুলালকে দেখতে পান না তাঁরা। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ।
জানা গিয়েছে, এরপর ঝড় থামলে জয়ন্তরা ঘাটে গিয়ে কোনওক্রমে পারে ফিরে আসে। রাত্রিবেলা উত্তরপাড়া থানার কোন্নগর ফাঁড়ির পুলিশ ও কোন্নগর পুরসভার কাউন্সিলর লাল্টু মজুমদার একটি লঞ্চ নিয়ে গঙ্গায় তল্লাশি চালায়। রবিবার সকালে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সাহায্যে খোঁজা হবে বলে জানা গিয়েছে।
বস্তুত, গতকাল বিকালেই ঘনিয়েছিল রাতের অন্ধকার। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস সত্যি করে বিকালেই কলকাতার বুকে আছড়ে পড়েছিল কালবৈশাখী। এ দিকে, এবারের মরসুমে যে চারটি কালবৈশাখীর দেখা মিলেছে তার মধ্যে এটিই সবথেকে বেশি তীব্রতর বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর। তিলোত্তমার বুকে বয়ে গিয়েছে ৯০ কিলোমিটার গতিবেগের ঝোড়ো হাওয়া। শুধু কলকাতা নয়, সংলগ্ন দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটি জেলার ছবিটি ছিল এক। কোথাও গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়েছে, কোথাও আবার বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে।