গোঘাট: কারোর বমি, কারোর পায়খানা, কারোর পেটব্যথা। একটা গোটা গ্রামের অবস্থা ঠিক এতটাই ভয়ঙ্কর। গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দা আক্রান্ত ডায়রিয়ায়। ক্রমাগত বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা। শনিবার রাত্রিবেলা পৌঁছেছে মেডিকেল দল। চলছে চিকিৎসা। পানীয় জল থেকেই এমনটা হতে পারে বলে ধারণা গ্রামবাসী থেকে পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি ও কর্মাধ্যক্ষের।
হুগলির গোঘাটের কাঁকুড়িয়া গ্রামের ঘটনা। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত একটি গ্রামের একাধিক জন। আক্রান্তদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ন’জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। বাকিদের গ্রামেই চিকিৎসা চলছে। ওই গ্রামে আপাতত মেডিকেল একটি দল রয়েছে। এই ঘটনার জেরে গোটা গ্রামেই মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
মূলত, গোঘাটের এই কাঁকুড়িয়া গ্রামে আদিবাসীদেরই বাস । এলাকায় জলের সমস্যাও দীর্ঘদিন ধরে প্রকট। সেখানে বসবাস করেন মোট চল্লিশটি পরিবার। অথচ, মাত্র দু’টি পানীয় জলের কল। তাও আবার মাঝে মধ্যেই তা খারাপ হয়ে যায়। তাই বেশির ভাগ মানুষই পুকুরের জলই বেশি ব্যবহার করে থাকেন। পুকুরের জলেই গৃহস্থালির কাজ-কর্ম থেকে শুরু করে স্নান করা, আনাজ ধোওয়া, ঘরের বাসন ধোওয়া, এমনকী রান্নাও করেন পুকুরের জলেই।
গ্রামবাসীদের ধারণা, পুকুরের জল থেকেই হতে পারে এই রোগ। রবিবার সন্ধ্যার পর ক্রমশই গ্রামে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে। প্রথম পর্যায়ে পনেরো জনকে নিয়ে যাওয়া হয় গোঘাট ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা চললেও আরও আক্রান্তের খবর আসতে থাকে। তাই তড়িঘড়ি তাঁরা গ্রামে মেডিকেল টিম পাঠান। গ্রামেও চিকিৎসা শুর হয়। এরপর গ্রামে হাজির হন গোঘাট এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন পাল ও কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ চন্দ্র পাঁজা।
গ্রামবাসীরা বলেন, ‘জল থেকেই সমস্যা হচ্ছে। আমাদের একটি পুকুর। সেই পুকুর আবার জলা-জঙ্গলে ভর্তি। তাই মনে হচ্ছে ওই পুকুরের জল ব্যবহার করেই যেন এমনটা হচ্ছে। একটি মাত্র কল। তাও আবার তা থেকে কখনও-কখনও জল পড়ে না। মূল কথা ওই টিউবওয়েল ব্যবহার করা অযোগ্য। মোট চল্লিশটি পরিবার রয়েছে। প্রত্যেকের ভরসা ওই পানীয় জলের কল। সপ্তাহ খানেক ধরেই চলছিল অসুস্থতা। একজন-একজন করে এখন অনেক জনের ডায়রিয়া হয়ে গিয়েছে।’