মাহেশ: এবার মাহেশের রথ যাত্রার ৬২৬ বছরে পড়ল। মার্টিন বার্ন কোম্পানির তৈরি লোহার রথের বয়স ১৩৭ বছর। মাহেশে আগে ছিল কাঠের রথ। করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে গত দু’বছর রথযাত্রা স্থগিত রাখা হয়েছিল। এবার রথযাত্রা হচ্ছে মহা সমারোহে। মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইত পিয়াল অধিকারী জানিয়েছেন, মাহেশে রথযাত্রা দেখতে বহু মানুষের সমাগম হয়। এখনও করোনা পুরোপুরি দূর হয়নি, সমাজিক দূরত্ব বিধি মানা হয়তো অসম্ভব। তাই প্রশাসন থেকে মাস্ক স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
রথের দিন রীতি মেনে জগন্নাথ মন্দিরের দালানে আনা হয় জগন্নাথ-বলভদ্র ও সুভদ্রা। তার আগে দু’দিন ধরে চলে নবযৌবন উৎসব। প্রথা অনুযায়ী স্নান যাত্রার পর মন্দিরের দরজা ভক্তদের জন্য বন্ধ থাকে। কথিত আছে, ওই সময় জগন্নাথদেবের জ্বর আসে। কবিরাজের পাঁচন খেয়ে জ্বর সারার পর হয় নবযৌবন। রাজবেশে সাজানো হয় পড়ানো রুপোর হাত।
এদিন সারাদিন ধরে চলে পুজোপাঠ। কথিত আছে, নারায়ণই কলিকালের জগন্নাথ। সেই কারণে নারায়ণ শিলাকে প্রথমে রথে বসানো হয়। তারপর সুভদ্রা,বলভদ্র ও জগন্নাথ। বিকাল চারটেয় পড়বে রথের রশিতে টান। মাহেশের রথ ম্যানিলা দড়ি দিয়ে টানা হয়। প্রথা অনুযায়ী তোপধ্বনি দিয়ে শুরু হয় রথযাত্রা।
এই রথ ৫০ ফুট উচ্চতার, লোহার বারোটি চাকা। ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম রথযাত্রা মাহেশের রথযাত্রা। কলকাতার শ্যামবাজারের বসু পরিবার রথ তৈরি করে দিয়েছিল। সেই ১২৫ টনের সেই লোহার রথ গড়াবে রাজপথে।
দুবছর পরে রথের চাকা গড়াবে। তাই ভক্তদের ঢল নামবে মাহেশে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তায় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ মন্দির ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী। মেডিক্যাল ক্যাম্প, অ্যাম্বুলেন্স, দমকল মোতায়েন থাকবে। পানিহাটিতে দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ পথে এবং রাস্তার পাশে ব্যারিকেড করা থাকবে।