হুগলি : হাইকোর্ট আর সিবিআইয়ের সাঁড়াশি চাপে কার্যত নাজেহাল অবস্থা রাজ্যের শাসক দলের। একের পর এক নেতা ও মন্ত্রীকে তলব করা হচ্ছে সিবিআই অফিসে। এই নিয়ে এমনিতেই তৃণমূলের অস্বস্তির শেষ নেই। আর তারই মধ্যে এবার কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরেশ অধিকারীদের সিবিআই তলব প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, “পরেশ অধিকারী কী করেছেন, তা সবাই জানে। পরেশ অধিকারী তৃণমূলে যোগদান করতে এসেছিলেন। পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের বাড়িতে মিটিং হয়। মিটিংয়ে তিনি তিনটি শর্ত দিয়েছিলেন। প্রথম শর্ত, মেধা তালিকার ওয়েটিং-এ নাম না থাকা সত্ত্বেও মেয়ের চাকরি। দ্বিতীয় শর্ত, চাংরাবান্ধা উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান। তৃতীয় শর্ত, কোচবিহার লোকসভার টিকিট। তৃণমূল তিনটি শর্তই রেখেছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ইমিডিয়েট পরেশ অধিকারীর মেয়েকে জয়েন করাও।” এই বৈঠকের কথা সিবিআইকে জানিয়ে রাজসাক্ষী হওয়ার জন্যও পরেশ অধিকারীকে পরামর্শ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
এর পাশাপাশি চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও। বলেন, “অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করতে হবে। আগে মাগুর মাছ বিক্রি করত। এখন এক হাজার কোটি টাকার মালিক। মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিকের যদি জেল হতে পারে, তাহলে এদের কেন হবে না?” সেই সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে যারা পরীক্ষা দেয়নি তাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে শত শত কোটি টাকা নিয়ে। আর এই দূর্নীতি সর্বত্র হয়েছে।”
রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “দুর্নীতি কোথায় হয়নি? পাবলিক সার্ভিস কমিশনে হয়েছে। এই রাজ্যে একজন ডাব্লুবিসিএস আছেন, যিনি ফেল করেছেন, তাঁকে ডব্লুবিসিএস বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কুকুরকে যে বেরাতে নিয়ে যায়, তাকে চাকরি দিয়েছে। এত সবে এসএসসি, এরপর সবকিছুতে দুর্নীতি হচ্ছে। ওয়েবেলেও দুর্নীতি হয়েছে, প্রমাণ করে দেব।”
বিরোধী দলনেতা আরও বলেন, ” এরা বলে সিবিআই বিজেপির বন্ধু। পুলিশের শীর্ষে কারা থাকবে সেটা যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একা ঠিক করেন।সিবিআইতে তা হয় না। রাজ্যে সিবিআই আসছে কেন? পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করে। ছাপ্পা মারার কাজে ব্যবহার করা হয়। তাদের সিআরপিসি অনুযায়ী কাজ করতে দেওয়া হয় না। বগটুইয়ে যাদের পুড়িয়ে মারা হয়েছে তারা বিজেপি করত না। তারা সিবিআই চেয়েছে। আনিস খানের পরিবার এখনও সিবিআই চায়। শুধু বিজেপি নয়, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে কেউই পুলিশে আস্থা রাখতে পারছে না।”