চন্দননগর: ন্যাকের তালিকায় বি প্লাস-প্লাস ক্যাটাগরি। অত্যন্ত সাধারণ সেই ডিগ্রি কলেজের পড়ুয়ারা চাকরি পেলেন টাটা (TATA) গোষ্ঠীর সংস্থা টিসিএস-এ (TCS)। প্রায় ৩২ জন পড়ুয়াকে চাকরি দিয়েছে টাটা গোষ্ঠী। আনন্দে কার্যত চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না ওই পড়ুয়ারা। যেখানে মূলত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ পাশ পড়ুয়ারাই চাকরি পেয়ে থাকেন সেখানে একটি সাধারণ ডিগ্রি কলেজের পড়ুয়াদের এমন সুযোগ দিয়েছে টাটা যা কার্যত ভাবতেই পারছেন না তাঁরা।
হুগলির চন্দননগর বৌবাজার এলাকায় অবস্থিত খলিসানী মহাবিদ্যালয়। ন্যাক বলছে সেটি বি প্লাস-প্লাস ক্যাটাগরির কলেজ। আর্টস,কমার্স,সায়েন্স মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজারের মতো পড়ুয়া রয়েছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের লক্ষ্য কলেজ পাশ করে কিছু একটা চাকরি পাওয়া। কারণ সরকারি চাকরি পেতে খানিকটা সময় লাগবে। তাই পড়ুয়ারা মূলত বেছে নেন বেসরকারি কোনও চাকরি। আর খলিসানী কলেজ সেই সুযোগটাই যেন করে দিল তাদের পড়ুয়াদের।
কলেজের অধ্যক্ষ অর্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,”রাজ্য সরকারের উৎকর্ষ বাংলা কলেজের সঙ্গে টাটার সংস্থা টিসিএস-এর যোগাযোগ করিয়ে দেয়। গত ১০ মার্চ কলেজে ক্যাম্পাসিং হয়। ৪৫৩ জন নাম নথিভুক্ত করেন। ১০৯ জনকে বেছে নিয়ে তাঁদের পরীক্ষা নেয় টিসিএস। তাদের মধ্যে ৩২ জনকে নির্বাচন করে। আজ সেই চাকরি প্রার্থী পড়ুয়াদের ই-মেল করে জানিয়ে দেওয়া হয় চাকরি হয়ে গিয়েছে।”
স্বভাবতই খুশি ছাত্র-ছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকরা। বুধবার কলেজে এসে তাঁরা অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। অধ্যক্ষ বলেন,”সাধারণত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এধরনের ক্যাম্পাসিং হয়। টিসিএস-এর মত সংস্থা ক্যাম্পাসিং করবে এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। আমাদের মত কলেজে যা অন্যান্য কলেজ থেকে ধারে ভারে অনেকটা পিছিয়ে আছে। চাকরি না থাকায় ডিগ্রি কলেজে ছাত্র ছাত্রী কমছে উল্লেখযোগ্য ভাবে সেখানে এই সুযোগ দৃষ্টান্ত হতে পারে।”
কলেজে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এর মত পরিকাঠামো নেই। তবুও ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে পড়ুয়াদের কিছুটা প্রশিক্ষিত করা হয়।এই ক্যাম্পাসিং থেকে অন্য কোম্পানিও আগ্রহ দেখাচ্ছে। প্রতিবছর দেড় হাজার থেকে আঠারাশো ছাত্র ছাত্রী স্নাতক হন। কিন্তু তাঁরা ভাবেন কী করবেন। এই পরিস্থিতিতে এহেন চাকরি স্বাভাবিকভাবেই খুশি সকলে।
চাকরি পাওয়া অনিন্দিতা কর্মকার, প্রিন্স পাশোয়ানরা বলেন,”কলেজ পাশ করে কিছু একটা করার ইচ্ছা ছিল। এই রকম ভাবে হঠাৎ টিসিএস-এর মত নামী সংস্থায় চাকরি পেয়ে যাব ভাবিনি। তবে চাকরি তো প্রয়োজন। ব্যাক অফিসে ডাটা অ্যানালিস্ট হিসাবে কাজ করতে হবে আমাদের। এক বছর প্রভেশনাল সময় পরে আমাদের স্থায়ীকরন হবে।” মঞ্জু দেবী নামে এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন,”আমরা গরীব মানুষ। আমার মেজো মেয়ে কলেজে পড়তে পড়তে চাকরি পেল। মোটা বেতনও শুনছি। এর থেকে আনন্দের আর কিছু হয় না।”