হুগলি: পুজো করা যাবে না। পুজোর প্রস্তুতি নিলেই জুটব বেধড়ক মারধর। এলাকায় ‘বিধায়ক ঘনিষ্ঠ’ তৃণমূল (TMC) নেতার দাদাগিরিতে কার্যত তটস্থ এলাকাবাসী। এমনকী, পুজো উদ্যোক্তাদের ব্যাপক মারধর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতা সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে।
পুজো উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, গত পাঁচ বছর ধরেই গোঘাটে এই পুজো হয়ে আসছে। কিন্তু, আচমকাই এ বছর এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা সুশান্ত ঘোষ পুজোতে রীতিমতো বাধা দেন। এলাকার যে মাঠে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছিল সেখানে এখন কেবল পড়ে রয়েছে কিছু বাঁশ। বাকি ধূলিসাত্ করে দেওয়া হয়েছে। পুজোর কাজে হাত দিতে গেলেই মারধর করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এমনকী, তৃণমূল নেতার মারধরের চোটে দুই পুজো উদ্যোক্তা কামারপুকুর হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি।
আক্রান্ত পুজো উদ্যোক্তার স্ত্রী সুর্বণা নায়েকের কথায়, “আমার স্বামী কোনও দল করে না। ও পুজোর কাজে ছিল। গত পাঁচ বছর ধরে এই পুজোটা হয়ে আসছে। তৃণমূল নেতা সুশান্ত ঘোষ এ বছর পুজোর কাজে হাত দেওয়ার পরেই মারধর করেছে। এমন মেরেছে আমার স্বামীর দুই কাঁধ ফাটিয়ে দিয়েছে। কেন এমন করছে তা আমরা কেউ জানি না। কেন পুজো নিয়ে ঝামেলা করছে তাও জানা নেই। আমার স্বামী এখন কামারপুকুর হাসপাতালে ভর্তি।”
এক পুজো উদ্যোক্তা বলেন, “এলাকা নিজের দখলে রাখতে চায় সুশান্ত। তাই গ্রামের একটা মাত্র পুজো নিজের হাতে রাখতে চায়। আমাদের মারধর করছে। পুজো আটকে দিতে চাইছে। বিধায়কের কাছের লোক বলে আমরা নিরুপায়। কিছু করতে পারছি না। আমাদের লোকেদের মারধর করছে ওর দলের গুণ্ডারা। আমরা গোঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।”
যদিও, এই মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল (TMC) নেতার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কিন্তু, গোঘাটের তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি তপন মণ্ডল বলেন, “আমরা এই অভিযোগ পেয়েছি। খবরটা পেয়েই উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। আমাদের দলের তরফে এমন কোনও নির্দেশ নেই যে পুজো করা যাবে না। এমনকী আমাদের জননেত্রী খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন গতবছর থেকে চালু হয়েছে বা এ বছর প্রথম চালু হয়েছে এমন সব পুজো করা যাবে। কেউ যদি এমন কোনও ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে তার উপযুক্ত শাস্তি হবে।”
শাসক শিবিরের অন্দরের খবর, সুশান্ত ঘোষ ওরফে লালু এলাকার দাপুটে নেতা। পাঁচ বছর আগে এই গোঘাটের এই গ্রামের পুজোটি শুরু করেছিলেন সুশান্ত। কিন্তু, করোনাকালে পুজোতে লোক টানতে পাশাপাশি এলাকা নিজ দখলে রাখতে এই ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন। পাশাপাশি, ওই নেতা প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদার ঘনিষ্ঠ বলেই তাঁর বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খুলছেন না এলাকাবাসী। তবে ইতিমধ্যেই গোঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: Post Poll Violence: জিজ্ঞাসাবাদই সার, সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম নেই শেখ সুফিয়ানের