রিষড়া: ওদের কলরবেই সকাল থেকে বিকাল যেন প্রাণ পেত গোটা স্টেশন চত্বর। অফিস ফিরতে টাইমে হাজার হাজার মানুষের ক্লান্ত ভিড়টা যেন ওদের কিচরমিচিরেই নতুন করে অক্সিজেন পেত। শেষ সন্ধ্যাতেও যে ঘরে ফিরেছিল ওরা, সকালেই সে ঘর আর নেই! কাটা পড়েছে একের পর এক গাছ। আশ্রয়হীন হাজার হাজার পাখি। হতাশ চিত্তে কেউ ঘুরে বেড়াল পুরনো জায়গার আশপাশেই, কারও দেহ পড়ে রইল গাছের গোড়ায়। রিষড়া স্টেশনের অবস্থা দেখে সকাল খেকেই ভিড় বাড়ছে পরিবেশ থেকে পশুপ্রেমীদের। এ বিষয়ে এদিনই তাঁরা রিষড়া স্টেশনের স্টেশন মাস্টারকে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে বলেও খবর।
রিষড়া স্টেশনের প্লাটফর্মে প্রাচীন বট, অশ্বত্থ গাছ কাটা শুরু হয়েছে বিগত কয়েকদিন ধরেই। এই গাছগুলিতেই দীর্ঘদিন থেকেই বাসা বেঁধে থাকত প্রচুর সামুকখোল,পানকৌরী,বক, কাক। কিন্তু, সেই গাছগুলিতে কোপ পড়তেই রাতারাতি ঘর ছাড়া অবলার দল। গাছের ডালে কোপ পড়তেই বাসা ভেঙে নিচে পড়ে যায় অনেক পাখি। অনেক বাসাতেই আবার ছিল সদ্য ডিম থেকে ফোটা পাখি, অনেক বাসাতে আবার সদ্য পাড়া ডিম। কিন্তু, রাতারাতি সব শেষ। বড়দের সঙ্গেই মৃত্যুর মুখে ঢোলে পড়ল উড়তে শেখেনি এমন অসংখ্যা পাখিও।
খবর পেয়ে রিষড়া স্টেশনে এসে অনেক পাখিকে বাঁচানোর চেষ্টা করে পশুপ্রেমীরা। খবর যায় বন দফতরেও। আচমকা গাছ কাটায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন পশু-পাখি প্রেমী বলে পরিচিত এলাকার বাসিন্দা চন্দন সিং। তিনি বলছেন, “প্রচুর গাছ কাটা হয়েছে। প্রচুর পাখি মারা গিয়েছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব এটার তদন্ত করতে। পরিবেশে তো গাছ, পশু-পাখি, মানুষ একসঙ্গে সবাই থাকলে তবেই ভারসাম্য রক্ষা হবে!” ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রিষড়ার পরিবেশ কর্মী সাবির আলিও। তিনি বলছেন, “আমরা চাইছি রেল যেমন গাছ কেটেছে তেমনই এখানে আবার গাছ লাগাক। রিষড়ায় রেলের আরও অনেক সমস্যা রয়েছে। কিন্তু, সেগুলিতে নজর দেওয়া হচ্ছে না।”