হুগলি: আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। সব কিছু ঠিক থাকলে সকাল আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যেই আলোর দেখা পাবেন সড়ক্ষে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিক। শুধু তাঁরাই নয়, বাড়ির ছেলেকে কখন কাছে পাবেন সেই আশায় বুক বাঁধছেন তাঁদের পরিবারের লোকজনও। হুগলির নিমডিঙ্গির জয়দেব প্রামাণিকও আটকে পড়া শ্রমিকদের মধ্যে একজন। জয়দেবের বাবা তাপসবাবুকে আজ খানিকটা নিশ্চিন্ত লাগল। বাড়ির ছেলে বাড়ি ফিরবেন এই ভেবেই কিছুটা উচ্ছ্বসিত বৃদ্ধ বাবা। তবে এখনও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেননি। আগে অন্ধকার থেকে বাইরে আসুক তারপর সব। নিজেই জানালেন তাপসবাবু
এ দিন সকাল-সকালই টিভি ৯ বাংলা পৌঁছে গিয়েছিল জয়দেব প্রামাণিকের বাড়িতে। সেখানে পৌঁছতেই দেখা গেল নিজের দোকান খুলেছেন জয়দেবের বাবা। একটি ছোট চায়ের দোকান রয়েছে তাঁর। ভোর হতেই সেখানে আনাগোনা শুরু হয়েছে স্থানীয় মানুষজনদের। আজ আবার খদ্দের বেশি। প্রায় সকলেই জানে জয়দেবের খবর। সেই কারণে তাঁরাও উৎসাহিত পাড়ার ছেলে কখন ফিরবে সেই আশায়। প্রায় সকলেই চোখ রেখেছেন টিভি ৯ বাংলায়।
সুড়ঙ্গে জয়দেব আটকে পড়ার পর ছেলের চিন্তায় দোকান বন্ধ করে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা। কিন্তু অভাবের সংসার। বেশিদিন দোকান বন্ধ রাখা যায় না। নয়ত, হেঁসেল টানবেন কীভাবে? এ দিন, তাপসবাবুকে প্রশ্ন করা হল ছেলেকে কি এমন কাজে পাঠাবেন তিনি আর? আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে তিনি উত্তর দিয়ে বললেন, “হ্যাঁ পাঠাব। ও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে জয়ী হয়ে ফিরছে। আমি বাধা দেব না। ছেলেকে ঘরে বসিয়ে রাখলে চলবে না। ওর সাহসকে আমি নষ্ট করতে চাই না।” তিনি বললেন, “আমাদের তো জমি জায়গা নেই। এইটুকু দোকান। দীর্ঘদিন সেই দোকান বন্ধ ছিল। ওর মা খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। কালকে খবর শোনার পর একটু উঠে বসেছে। আজ আমি দোকান খুলেছি।”