হুগলি: শ্রীরামপুরের (Srirampore Blast) একটি কারখানায় বিস্ফোরণ। সেই বিস্ফোরণের তীব্রতায় কেঁপে উঠল এলাকার একাধিক বাড়ি। বিস্ফোরণের তীব্রতায় পাঁচ থেকে ছ’টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। আতঙ্কে ভুগছেন এলাকার লোকজন। শ্রীরামপুর রাজ্যধরপুর দক্ষিণপাড়ায় ওই কারখানা। সেখানে ছাট থেকে লোহা গলানোর কাজ চলে। অভিযোগ, তাতে শেল থেকেও ছাট লোহা বের করা হয়। বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা গ্যাস দিয়ে সেই ছাট কাটার কাজ করছিলেন। হঠাৎই প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। এলাকার লোকজনের দাবি, তাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় সংলগ্ন এলাকার পাঁচ থেকে ছ’টি বাড়ি। বাড়ির দেওয়ালে ফাটল ধরেছে, কোথাও আবার খুলে গিয়েছে ঘরের টিন। তীব্রতার পরিমাণ এতটাই ছিল সিলিং ফ্যান খুলে নীচে পড়ে যায়। ভেঙে যায় জানলার কাচ। আতঙ্কে বাইরে বেরিয়ে আসেন বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা সুমিত্রা দেবনাথ জানান, কারখানার জন্য সবসময়ই সমস্যা হয়। ধোঁয়া আর গন্ধে থাকা যায় না। ধোঁয়ার ফলে দিনেরবেলাও গোটা এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। এলাকার বয়স্ক, বাচ্চাদের জন্য ঝুঁকিবহুল হয়ে উঠছে এলাকা। সুমিত্রার কথায়, এদিন তিনি বাড়িতে কাজ করছিলেন। হঠাৎই তীব্র শব্দ শুনতে পান। বলেন, বোমাবাজির শব্দও এর থেকে কম। এরপরই দেখেন কারও জানলার কাচ ভেঙে গিয়েছে, কারও সিলিং ফ্যান খসে পড়েছে মাটিতে।
আরেক বাসিন্দা রিম্পা ঘোষের কথায়, “ছেলেকে নিয়ে সাড়ে ১০টা নাগাদ স্কুল থেকে আসি। বিছানায় বসে স্কুলের বইখাতা দেখছি। ছেলে বাথরুমে তখন, বাইরে বীভৎস শব্দ। এক মুহূর্তের জন্য মনে হল যেন সব শেষ। তাকিয়ে দেখি সিলিং ফ্যানটা এসে সামনে পড়ল। আরেকটু হলে বোধহয় আমার মাথাতেই পড়ত। তারপর ভয়ে চিৎকার শুরু করি। পাশের বাড়ির একজন তো কান্নাকাটি শুরু করেছেন। ভাবছেন আমাদের বাড়িতে কিছু হয়েছে। তারপর বেরিয়ে দেখে কারখানা ধোঁয়ায় ঢাকা।” এখনও আতঙ্কে এলাকার লোকজন।
এদিনের বিস্ফোরণে দুই শ্রমিক মারা যান। আহত হন চারজন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। স্থানীয় বিধায়ক তথা হুগলি শ্রীরামপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি অরিন্দম গুঁইনও যান ঘটনাস্থলে। বলেন, লোহা কাটাইয়ের সময় দুর্ঘটনা ঘটে। দু’জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। তিনজন আহত। ডিফেন্সের কিছু জিনিস হতে পারে বলে জানান তিনি। এগুলি বৈধ নাকি অবৈধ তা দেখা দরকার বলেও দাবি করেন তিনি।