TMC Leader: এক সময় সিম বিক্রি করতেন! কীভাবে ‘লুচির মতো’ ফুলে উঠল তৃণমূল নেতা শান্তনুর সম্পত্তি

প্রথমে জিরাট কলেজে ছাত্র পরিষদের দায়িত্ব পান। এরপরই ব্লকের পাশাপাশি জেলাতেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা হন তিনি।

TMC Leader: এক সময় সিম বিক্রি করতেন! কীভাবে ‘লুচির মতো’ ফুলে উঠল তৃণমূল নেতা শান্তনুর সম্পত্তি
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলাগড়ের বাড়ি সিসিটিভিতে মোড়া।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 11, 2023 | 12:21 PM

হুগলি: সালটা ২০০৫। মোবাইল ফোনের সিম ও বিভিন্ন প্রসাধনী জিনিস বিক্রি করতেন বলাগড়ের যুবক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় (Shantanu Banerjee)। কমমেটিক্স বিক্রেতা থেকে রকেট-গতিতে উত্থান হয় তাঁর। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার ইডির হাতে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর বিলাসবহুল বাড়ি থেকে শুরু করে গঙ্গার ধার ঘেঁষে মনোরম বাগানবাড়ি-সহ একাধিক চোখ ধাঁধানো সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। মিলেছে বলাগড়ে ফার্ম হাউজের খোঁজও। শান্তনুর বাবা বিদ্যুৎ দফতরে কাজ করতেন। বাবার মৃত্যুর পর সেই দফতরে কাজ পান তিনি। ধীরে ধীরে রাজনীতির কোলে ঘেঁষতে থাকেন শান্তনু।

প্রথমে জিরাট কলেজে ছাত্র পরিষদের দায়িত্ব পান। এরপরই ব্লকের পাশাপাশি জেলাতেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা হন তিনি। ছাত্র নেতা থেকে এরপর যুবনেতা হয়ে ওঠেন। জেলায় যুব সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পান। সেখান থেকে রাজ্য যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি করা হয় শান্তনুকে। হুগলি জেলার পাশাপাশি পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যুবর অবজারভারের দায়িত্ব ছিলেন। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারকেশ্বর থেকে জয়ী হয়ে হুগলি জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ হন।

ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ক্ষমতা, প্রতিপত্তি। বলাগড়ে বারুইপাড়ার বাড়ির কাছে রয়েছে ‘দ্য স্পুন’ নামে অত্যাধুনিক একটি রেস্তোরাঁ, ধাবা। ২০২১ সালে এই ধাবা তৈরি হয়। এসটিকেকে রোডের পাশে যেখানে এই ধাবা রয়েছে, সেখানে চারটি পরিবারের বসবাস ছিল। এলাকাবাসীরা জানান, এই ধাবা তৈরি করবেন বলে সরানো হয় পরিবারগুলিকে।

ধাবা, হোম-স্টের পাশাপাশি বলাগড়ের চাদরা বটতলা এলাকায় গঙ্গার পাড়ে বিশাল একটি রিসর্টও আছে শান্তনুর। রিসর্টের পাশাপাশি বেশ কিছু জমিও নামে বেনামে কিনেছেন বলে এলাকাবাসীর দাবি। এমনও তাঁরা বলছেন, মাঝেমধ্যে এই রিসর্টে বাইরে থেকে বেশ কিছু গাড়ি আসত। টানা কয়েক ঘণ্টা থেকে বেরিয়ে যেত গাড়িগুলি। যদি কে বা কারা আসত, তা খুব একটা স্পষ্ট নয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সুকুমার নন্দী জানান, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে এই রিসর্ট। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষজন আসেন। মিটিংও হতো। শুধু রিসর্ট নয়, আরও বেশ কিছু সম্পত্তি রয়েছে এই শান্তনুর নামে। এছাড়াও বহু জায়গা বেনামেও কেনা রয়েছে বলে জানান তিনি। বলাগড় বিজেপি যুব মোর্চার আহ্বায়ক চিরঞ্জিত রায়ের অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা শান্তনুর কাছে এসেছে। সেই টাকা দিয়ে ধাবা, রিসর্ট, হোটেল, হোম স্টে, একাধিক ফ্ল্যাট এবং প্রচুর জমি কেনা হয়েছে।

ইতিমধ্যেই শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাঙ্কের নথি নিয়ে তাঁকে জেরা করা হয়েছে। কোথায় কোথায় বিনিয়োগ করেছিলেন, কাদের সঙ্গে ব্যাঙ্ক লেনদেন হয়েছে সমস্ত তথ্য জানতে চায় ইডি। শুক্রবার সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শনিবার মেডিক্যাল পরীক্ষার পর আদালতে যাবে ইডি। নিয়োগ দুর্নীতির টাকায় শান্তনুর লাভের ভাঁড়ার কতটা ভরেছে, তা তুলে ধরবে ইডি।