Donald Trump: ক্ষমতায় এসেই গোটা গ্রিনল্যান্ডই কিনে নিতে চান ট্রাম্প! কিন্তু কেন? কী রয়েছে সেখানে?
Donald Trump: উত্তর আটলান্টিকে সুমেরুর কাছে গ্রিনল্যান্ড বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ। ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন, স্পেন-সহ ইউরোপের একাধিক দেশের মিলিত আয়তনের চেয়েও বড় গ্রিনল্যান্ড। তবে, জনসংখ্যা মাত্র ৬০ হাজার। কারণ, দ্বীপের ৮০ শতাংশ এলাকাই সারা বছর বরফে ঢাকা থাকে। ভৌগোলিকভাবে গ্রিনল্যান্ড হল উত্তর আমেরিকার অংশ। কিন্তু কেন এদিকে নজর ট্রাম্পের?
প্রথমে বললেন কানাডার জিনিসে চড়া শুল্ক চাপাব। না চাইলে, কানাডা আমেরিকার একান্ন নম্বর প্রভিন্স হয়ে যাক। তারপর বললেন, পানামা খাল দিয়ে মার্কিন জাহাজের যাতায়াতে পানামা বড্ড বেশি টাকা নিচ্ছে। পানামা খালটাই এবার পানামার কাছ থেকে নিয়ে নেব। এই তালিকায় আপাতত শেষ সংযোজন গ্রিনল্যান্ড। ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া, ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন গোটা গ্রিনল্যান্ড দ্বীপটাই কিনে নিতে চান তিনি। পে-প্যালের প্রতিষ্ঠাতা কেন হাওয়ারিকে ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডের নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সে কথা জানাতে গিয়ে দেশটাকেই কিনে নেওয়ার কথা বলেছেন। যুক্তি দিয়েছেন, সারা বিশ্বের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ডের অধিকার আমেরিকার হাতে থাকা উচিত। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কেন এই দ্বীপ নিয়ে এত উত্সাহ?
উত্তর আটলান্টিকে সুমেরুর কাছে গ্রিনল্যান্ড বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ। ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন, স্পেন-সহ ইউরোপের একাধিক দেশের মিলিত আয়তনের চেয়েও বড় গ্রিনল্যান্ড। তবে, জনসংখ্যা মাত্র ৬০ হাজার। কারণ, দ্বীপের ৮০ শতাংশ এলাকাই সারা বছর বরফে ঢাকা থাকে। ভৌগোলিকভাবে গ্রিনল্যান্ড হল উত্তর আমেরিকার অংশ। আমেরিকা থেকে খুব দূরে নয়। তবে, রাজনৈতিকভাবে এই দ্বীপ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে পড়ে। বাস্তবে গ্রিনল্যান্ড হল অনেক দূরে থাকা ডেনমার্কের অধীনে একটি স্বশাসিত এলাকা। দেখুন, ট্রাম্প এই প্রথম যে গ্রিনল্যান্ড কেনার কথা বললেন, তা নয়। হোয়াইট হাউসে নিজের প্রথম দফাতেও বলেছিলেন। তখন ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ড প্রশাসন পত্রপাঠ সে প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। এবারও ট্রাম্পের পোস্টের পরই গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউট এগেডে বলেছেন আমরা বিক্রি হচ্ছি না।
এই খবরটিও পড়ুন
প্রসঙ্গত, ১৮৬০ সালে তত্কালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট অ্যানড্রু জনসন প্রথমবার গ্রিনল্যান্ড কেনার কথা বলেন। বিষয়টা বাস্তবায়িত না হলেও সেই থেকেই ব্যাপারটা চর্চায় রয়েছে। ট্রাম্প সেটাকেই বেশ জোরের সঙ্গে আবার উস্কে দিলেন। কেন তাঁর এই দ্বীপের দিকে নজর? গ্রিনল্যান্ডে এখন আমেরিকার মহাকাশ কেন্দ্র ও সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এই দ্বীপের দিকে নজর আছে রাশিয়ারও। ফলে ট্রাম্প দ্বীপটাকে হাতাতে চান। তবে এটাই একমাত্র কারণ নয়। গ্রিনল্যান্ড বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের আধার। লোহা, সিসা, দস্তা, হিরে, সোনা, ইউরেনিয়াম, তেল – কী নেই সেখানে! তবে, দ্বীপের বেশিরভাগ এলাকা পুরু বরফের নীচে থাকায় সেখানে খনন সম্ভব নয়। এখন গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য দ্রুত হারে বরফ গলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন আগামী কয়েক দশকে গ্রিনল্যান্ডে মাটির ওপরে থাকা মোটা বরফের চাদর অনেকটাই পাতলা হয়ে যাবে। তখন সেখানে খনি তৈরি করা যেতে পারে। আর তাই মনে করা হচ্ছে যে ট্রাম্পের নজর সেদিকে থাকতে পারে। তবে গ্রিনল্যান্ডে শিল্প হলে, খোঁড়াখুঁড়ি হলে দুনিয়ার বারোটা বাজতে বেশি সময় লাগবে না। চিন্তা সেখানেই। শোনা যাচ্ছে আরেকটা কথাও। আপনাদের বলে রাখি, অন্য দেশে জমি-বাড়ি-সম্পত্তি কেনাকে মার্কিন সমাজে রীতিমত এলেমের ব্যাপার বলে মনে করা হয়। ট্রাম্প আস্ত একটা দেশই কিনে নিয়ে এলেমের একেবারে চরমে পৌঁছতে চাইছেন কিনা, সে নিয়েও কিন্তু কানাঘুষো শুরু হয়ে গেছে।