হুগলি (আরামবাগ): পঞ্চায়েত (Panchayet Vote) ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই শাসকদলের কোন্দলের অভিযোগ বাড়ছে। এবার তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ উঠল আরামবাগের হরিণখোলা কেষ্টপুরে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এলাকায় বোমাবাজি, লাঠি নিয়ে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ উঠল। এমনকী রাজনৈতিক পরিচয় স্পষ্ট না হলেও এক যুবককে পিস্তল হাতে এলাকায় ছুটতে দেখা যায়। অভিযোগ, শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। তাঁদের আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই দলের ঝামেলায় বেশ কয়েকটি মোটরবাইক পুকুরের জলে ফেলে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনার পরই পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় হাজির হন আরামবাগের এসডিপিও, আরামবাগ থানার আইসির নেতৃত্বে পুলিশের দল। যদিও এরইমধ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান জয়দেব জানা।
সোমবার দুপুরে আরামবাগের মুথাডাঙা এলাকায় তৃণমূলের একটি কর্মিসম্মেলন ছিল। সকাল থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু হয়। বেলা বাড়তেই দলীয় কর্মী সমর্থকরা আসতে শুরু করেন। মোটরবাইক নিয়ে বেশ কয়েকজন আসেন সেখানে। অভিযোগ, সেই সময় এলাকার যুব তৃণমূলের কয়েকজন তাঁদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ায়। ব্যাপক মারধরের পাশাপাশি জলে বাইক ফেলে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। এরপরই উত্তাপ ছড়ায় এলাকায়। প্রকাশ্যে বন্দুক নিয়ে তেড়ে যাওয়ার অভিযোগও ওঠে।
বোমাবাজি, মারামারিতে কয়েকজন আহত হন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত তৃণমূল কর্মী হাফিজুল খান বলেন, “আমাদের মূল সংগঠনের সভা ছিল। আমরা মিটিংয়ে বেরিয়েছিলাম বলে আমাদের বেধড়ক মারধর করে। মাথা মেরে ফাটিয়ে দিয়েছে।”
এ বিষয়ে তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান জয়দেব জানা বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বহু লড়াইয়ের যাঁরা সঙ্গী তাঁদের এভাবে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি তৈরি করতে চাইছে। আমাদের দলের কাছে যা জানানোর জানিয়েছি। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। আমি তো খবর পাচ্ছি এলাকায় আমাদের কর্মীর বাড়িতে বোমাবাজি করছে। পিস্তল হাতে নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে আমার। যারা বোমাবাজি করল, প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশের ভূমিকা দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জাজনক।”
এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তথা পুরশুরার বিধায়ক বিমান ঘোষ বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই ওখানকার ১ নম্বর ও ২ নম্বর অঞ্চলে প্রধানের সঙ্গে বাকিদের মতবিরোধ। আজও দেখা গেল বন্দুক হাতে খোলাখুলি ঘুরে বেড়াচ্ছে। সামনে পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ছবি ভয়ঙ্কর।”