Hoogly Girl: টোটো চালিয়ে পড়ার খরচ তোলে মেয়ে, কাঁধে সংসারের জোয়ালও, কুর্নিশ জানান এই লড়াকুকে

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Nov 19, 2022 | 12:06 PM

Hoogly News: শ্রীরামপুর কলেজের বাংলা অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তমা দত্ত। তমাদের পুরনো একটি টোটো ছিল।

Hoogly Girl: টোটো চালিয়ে পড়ার খরচ তোলে মেয়ে, কাঁধে সংসারের জোয়ালও, কুর্নিশ জানান এই লড়াকুকে
তমা দত্ত।

Follow Us

হুগলি: দু’ চোখ তো স্বপ্ন দেখাবেই। কিন্তু সেই স্বপ্নকে সার্থক করতে লড়াই করতে হয় অনেক। একেকজনের লড়াই আবার একেকরকম। যেমন চাঁপদানির তমা দত্ত। পড়াশোনা করে ভাল একটা চাকরি করতে চান এই তরুণী। সেই লক্ষ্যে ভর্তি হন শ্রীরামপুর কলেজে (Sreerampur College)। কিন্তু উচ্চশিক্ষার জন্য যে খরচ অনেক! বাবার তেমন সামর্থও নেই। এই প্রতিকূলতাকে তাই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে টোটো কিনেছেন তিনি। পড়াশোনা তো চলবেই, সঙ্গে টোটো চালাবেন। তা থেকে যে টাকা আসবে তাতে সংসার খরচও হবে। আবার পড়াশোনার খরচও চালানো যাবে। তমা চান, সংসারের জোয়াল কাঁধে তুলে নিলেও একইসঙ্গে নিজের স্বপ্নকেও লালিত করতে।

শ্রীরামপুর কলেজের বাংলা অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তমা দত্ত। তমাদের পুরনো একটি টোটো ছিল। বাবা তা চালান। কিন্তু তাতে সংসার চালানো যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনই পুরনো টোটো হওয়ায় প্রায় প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে। ফলে খরচ লেগেই রয়েছে তার পিছনে। এরপরই তমা ঠিক করেন, টোটো কিনবেন। আগেও বাবার টোটো চালিয়েছেন তিনি। এবার বাপ-বেটি মিলে সংসারের হাল ধরতে চান।

শনিবারই চুঁচুড়া থেকে নতুন একটি টোটো কেনেন তমা। তমার এই লড়াইয়ের কথা শুনে টোটোয় বেশ কিছুটা ছাড়ও দিয়েছেন দোকানের মালিক। তমা বলেন, “কাজ না করলে আমার সংসারটা কীভাবে চলবে? সংসারের সঙ্গে সঙ্গে আমার পড়াশোনাটাও তো বন্ধ হয়ে যাবে। তাই টোটো কিনলাম। কিছু উপার্জন হলে সংসারটাও নিরাপদ থাকবে, পড়তেও পারব। আমি পড়াশোনা করে একটা ভাল চাকরির আশা করি। আপাতত টোটো চালিয়ে সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করছি।”

তমার ছোটো ভাই একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। বোন মাধ্যমিক দেবে। ওদেরও পড়াশোনার খরচ রয়েছে। মেয়ের এই সংগ্রাম জয় এনে দেবে, আশাবাদী তমার মা অঞ্জলি দত্ত। তাঁর কথায়, “লড়াই করে যাচ্ছে মেয়েটা আমাদের জন্য। আমি জানি ও একদিন পড়াশোনা করে ঠিক নিজের পায়ে দাঁড়াবে। ওর স্বপ্নটা পূরণ হবে।” অঞ্জলিদেবী জানান, মেয়ের লড়াইয়ের কথা জানতে পেরে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন চাঁপদানি পুরসভার চেয়ারম্যান সুরেশ মিশ্র, চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুঁই। মা নিজেও গলার হারখানা খুলে দিয়েছেন মেয়ের এই লড়াইয়ে সামিল হতে। তা বিক্রি করে কিছু টাকা এসেছে। সঙ্গে তমারও কিছু টাকা জমানো ছিল। তমা জানান, তাঁদের নিজের বাড়ি নেই। ভাড়া বাড়িতে থাকেন। মাস গেলে একটা বড় খরচ। বাঁচতে গেলে লড়াই যে করতেই হবে, তা তমারা জানেন। তবে এই লড়াইয়ের মাঝেই দু’চোখে স্বপ্ন বোনেন তাঁরা। জয় আসবে, সেই বিশ্বাসই একদিন জিতিয়ে দেবে তমাদের।

Next Article