হুগলি: রাজা রামমোহন রায়ের (Raja Rammohon Roy) বসতবাটি। খানাকুলের (Khanakul) রঘুনাথপুরের এই বসতবাটি এখন পর্যটনকেন্দ্র হয়েছে। হুগলি জেলা পরিষদ এই পর্যটন কেন্দ্রের পরিচালনার দায়িত্বে। অভিযোগ, এই ভিটেবাটিতে প্রতি বছর শীতকালে পিকনিক করতে আসেন পর্যটকরা। অভিযোগ, আগুন জ্বালিয়ে সেখানে চলে পিকনিক। সঙ্গে ওঠে পানীয়ের ফোয়ারাও। মদ নিয়ে এখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ। অথচ বড়দিনে সেখানে দেখা গেল মদ নিয়ে মাতামাতিও। নবজাগরণের পথিকৃৎ রাজা রামমোহন রায়। খানাকুলের এই বাড়ি তাঁরই তৈরি করা। সেই বাড়িকে ঘিরেই রঘুনাথপুরে তৈরি হয়েছে রাজা রামমোহন রায় পর্যটনকেন্দ্র। হুগলি জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন এই পর্যটন কেন্দ্রে রয়েছে ‘সতীদাহ বেদী’। সেখানে লেখা রয়েছে, রামমোহন রায়ের সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদের সংকল্পের কথাও।
মূলত এই পর্যটনকেন্দ্রের কোণায় কোণায় রয়েছে ইতিহাসের ছোঁয়া। বহু অতীতের সাক্ষ্য রামমোহন রায়ের এই বসতবাটি। ১৮১৭ সালে এই বাড়িটি তৈরি হয়। রামমোহনের স্ত্রী উমাদেবী এখানে থাকতেন। কলকাতা থেকে প্রায় প্রায়ই এখানে আসতেন রামমোহনও। পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন ২০০১-এর আইন অনুযায়ী এই রামমোহনের বাড়িকে হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের মর্যাদা দিয়েছে। এ বছরই এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
এখানেই এলাকার লোকজনের একাংশের প্রশ্ন। হেরিটেজ কীভাবে অনায়াসে পিকনিক স্পট হয়ে উঠতে পারে? প্রশ্ন উঠেছে যেখানে রাজা রামমোহন রায়ের বসতবাড়ি কে হেরিটেজ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার সেখানে আগুন জ্বালিয়ে কি পিকনিক করা যায়? রাজা রামমোহন রায়ের ভগ্নাবশেষ বাড়ির পাশেই আগুন জ্বালিয়ে চলছে পিকনিকের আসর।
পর্যটন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী প্রসেনজিৎ ঘোষের কথায়, “এখানে রামমোহন রায়ের বসতবাটি, সতীদাহ বেদী, উনি যেখানে ধ্যান করতেন ধ্যানমঞ্চ আছে, যে পুকুরে স্নান করতেন সেই পুকুর আছে। আর ওনার জীবন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একটি মিউজিয়াম তৈরি হচ্ছে। তবে হেরিটেজ ঘোষণা করা হলেও কোনও অনুদান কিছু পাইনি। জেলা পরিষদ চালায়। সে কারণে এখানে ঢোকার জন্য জনপ্রতি ১০ টাকা এন্ট্রি ফি ধার্য করা হয়েছে। বাচ্চাদের ৫ টাকা। পিকনিকের জন্য ১৫০ টাকার টিকিট। বাইক ১০ টাকা, সাইকেল ৫ টাকা।” যদিও এখন ছুটি থাকায় জেলা পরিষদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তা পেলেই যুক্ত করা হবে এই প্রতিবেদনে।