হুগলি: বেফাঁস রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না (Becharam Manna)। পুলিশকে ‘আছাড় মারার’ কথা বললেন মন্ত্রী। হুগলির চণ্ডীতলার জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন বেচারাম। সেই সময়েই মন্ত্রীর গলায় শোনা গেল, “পুলিশকে ধরে আছাড় মারব। এখানেই মারব। এটা মনে রাখবেন।” মন্ত্রীর মুখে এমন কথা চাউর হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে চারিদিকে। কিন্তু কেন হঠাৎ এমন বললেন মন্ত্রী? দুর্গাপুর এক্সপ্রেস ওয়ের উপর হরিপাল থেকে ডানকুনি পর্যন্ত ১১টি জায়গায় সাবওয়ের দাবি দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি হাইওয়ে সম্প্রসারণ ও মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। এমন অবস্থায় মন্ত্রীর দাবি, ওই ১১টি জায়গায় সাব ওয়ের জন্য ১০০ ফুট ছেড়ে কাজ করতে হবে। সেই সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলার সময়েই এমন বেফাঁস মন্তব্য করলেন মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, এদিন হরিপাল থেকে ডানকুনি পযন্ত ১১টি জায়গায় সাবওয়ের দাবিতে এদিন চন্ডিতলার জয়কৃষ্ণপুরে একটি সভা করেন রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলার অন্যান্য নেতা-নেত্রীরাও। মন্ত্রীর দাবি, দুর্ঘটনা এড়াতে এই জায়গাগুলিতে সাবওয়ে করা প্রয়োজন। এদিন সভা থেকে তিনি ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটির উদ্দেশে কড়া বার্তা দেন, ১১টি জায়গায় সাবওয়ে করার জন্য ১০০ ফুট ছেড়ে কাজ করতে হবে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটিকে। যে জায়গাগুলিতে সাবওয়ের জন্য দাবি তোলা হচ্ছে, সেই জায়গাগুলিতে কাজ করলেই গ্রামবাসীরা বাঁধা দেবে বলে জানান মন্ত্রী।
সেই সভা শেষে জয়কৃষ্ণপুর গ্রামেও যান মন্ত্রী বেচারাম মান্না। সেখানে গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। গ্রামবাসীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “ওই ১০০ ফুটের মধ্যে যে কাজ করতে আসবে, তাঁকে ধরে বেশ করে পিটিয়ে দেবে। বাকিটা আমি বুঝে নেব।” মন্ত্রীর কথা শুনে গ্রামবাসীরা বলেন, পুলিশের ভয় পাচ্ছেন তাঁরা। এরপরই বেচারাম মান্না তাঁদের বলেন, “রাস্তায় গাড়ি চলছে চলুক। সেখানে অবরোধ করা যাবে না। তখনই পুলিশ ঝামেলা করবে। কিন্তু কাজ বন্ধ করতে এলে, যদি পুলিশ বাধা দেয়, আমি পুলিশকে ধরে আছাড় মারব। এই খানেই মারব। এটা মনে রাখবেন।”
বেচারাম মান্নার বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা। বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বিমান ঘোষ বলেন, “একজন মন্ত্রী পুলিশকে আছাড় মারার কথা বলেন, এটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে দুর্ভাগ্যের। যদিও এটা নতুন নয়, এর আগেও তৃণমূলের এক জেলা সভাপতি যিনি এখন জেলের ঘানি টানছেন… উনিও বলেছিলেন পুলিশের উপর বোম মারার কথা। আসলে সামনে পঞ্চায়েত ভোট আসছে। যে পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে, তাদের এটা ধমক দেওয়া হল, যাতে তারা তাবেদারি করে।”