হুগলি: দুপুরে গঙ্গার ঘাটে মানুষের ভিড়। এরইমধ্যে দুই কিশোর হাতে পেল দু’টি কালো পাথর। স্থানীয়দের দাবি, জলে ভেসেছিল পাথর দু’টি। তাতে লেখা, ‘জয় শ্রীরাম’। শুক্রবার রায়ঘাটের গঙ্গায় যা নিয়ে হইচই পড়ে যায়। খবর ছড়াতেই গঙ্গার পারে ভিড় জমান এলাকার মানুষ। এই পাথর দেখে অনেকেই আবার পৌরানিক কাহিনীর কথাও আওড়িয়েছেন। তাঁরা আবার রামায়ণের সঙ্গে মিল খুঁজে পান। শুক্রবার সকালে গঙ্গা স্নান করতে গিয়ে দু’টি ভাসমান পাথর দেখতে পায় স্থানীয় দুই কিশোর। সেগুলি তুলে গঙ্গার ধারে নিয়ে আসে। এলাকার লোকজনের অনেকের মুখে শোনা যায় রামায়ণের কথা। তাঁদের কথায়, জলে পাথর ভেসে থাকা অসম্ভব। রামায়ণে ভগবান রাম ও বানর সেনা সীতাকে লঙ্কা থেকে উদ্ধারের জন্য সাগরের উপর যে সেতুবন্ধন করেছিলেন, তা এই পাথর ভাসিয়েই। এদিন উদ্ধার হওয়া পাথরও যেন বিলকুল সেই পাথরের মতোই।
প্রায় ৮ কেজি থেকে ১০ কেজি ওজন হবে পাথরের। এ বিষয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা অনিকেত ঝাঁ বলেন, “আমার রায়ঘাট এলাকায় বাড়ি। এখানে গঙ্গার ধারে আড্ডা দিতে আসি। তখনই দেখি পাথর জলে ভেসে এসেছে। সেটা তুলে আমরা নানা ভিডিয়ো বানাই। এটা খুব আশ্চর্যজনক বিষয়। প্রায় ৮-৯ কিলো ওজনের পাথর কীভাবে ভাসতে পারে?” বয়স অনেকটাই স্থানীয় বাসিন্দা অন্নপূর্ণাদেবীর। তিনি আবার পুরাণ ইতিহাসের কথা মনে করছেন এই ঘটনায়। অন্নপূর্ণাদেবী বলেন, “রামচন্দ্র লঙ্কায় যাওয়ার জন্য পাথর দিয়ে যে সেতু বানিয়েছিলেন, সেই পাথর কি না কে জানে। কারণ, সেই পাথর ভাসে, জলে ডোবালেও ডোবে না। এই পাথরটাও দেখছি ভাসছে।”
যদিও এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের আধিকারিক চন্দন দেবনাথ বলেন, “আমি দেখছিলাম পাথর দু’টো নিয়ে দু’টি বাচ্চা রীতিমত খেলছিল। পাথর ভাসবে না। এখানে দেখলাম পাথরটা ভাসছে। অনেক সময় দেখি অনেক বড় কর্পূরকে রং করে পাথরের মতো বানিয়ে ফেলা হয়। কিছুতেই বোঝা যাবে না এটা পাথর না কর্পূর। ভাঙলে মনে হবে ইটের মতো। আরেক হতে পারে, অনেক পুজোর বেদীতে বড় থার্মোকল ব্যবহার করা হয়। তার উপর সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে দেয়। নিচেও সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে দেয়। ঝামা ইট হলেও ভাসতে পারে।”