হাওড়া : বৃহস্পতিবার তিন বন্ধু মিলে গিয়েছিল বোটানিক্যাল গার্ডেনে। সেখানেই করছিল ঘোরাঘুরি। তাঁদের সন্দেহজনক গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয় গার্ডেনের নিরাপত্তীরক্ষীদের। সূত্রের খবর, তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গেলেই তাঁরা দৌড় দেয়। সোজা দিয়ে ঝাঁপ দেয় গঙ্গায়। যদিও ওই যুবকদের পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের ছেলেদের তাড়া করেছিল বোটানিক্যাল গার্ডেনের দারোয়ানরা। তাঁদের তাড়া খেয়েই ওরা গার্ডেনের রেলিং টপকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিতে বাধ্য হয়। তিন যুবকের নাম প্রসেনজিৎ মাঝি, সোনু মাঝি ও আকাশ মহাতো। প্রত্যেকেরই বয়স ১৮ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। সকলেরই বাড়ি বি-গার্ডেন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায়। এখনও পর্যন্ত সোনু মাঝি ও আকাশ মহাতোকে উদ্ধার করা গেলেও প্রসেনজিতের খোঁজ মেলেনি বলে খবর। এ ঘটনায় স্বভাবতই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
অসমর্থিত সূত্রে খবর, বৈধ টিকিট ছাড়া বি-গার্ডেনে প্রবেশ করেছিল তিন যুবক। সেখানে নেশাও করছিল। তা দেখেই তাঁদের ধরতে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। ছেলে যে নেশা করত তা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রসেনজিতের মা চম্পা মাঝি। যদিও সেখানে মধ্যে এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি বলে জানাচ্ছে বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ। গার্ডেনের রেলিংয়ের ভিতরে কিছু হয়নি বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন অ্যাসিটেন্ট ডাইরেক্টর দেবন্দ্র সিং। এমনকী পরিবারের তরফে যে অভিযোগ করা হয়েছে তাও ভিত্তিহীন বলে দাবি তাঁর। এদিকে ছেলের খোঁজ না মেলায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন প্রসেনজিতের মা। চাপা উত্তেজনা গোটা এলাকায়। বছর আঠারোর প্রসেনজিৎ সদ্য পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে কাজের খোঁজ করছিল বলে জানা যাচ্ছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে প্রসেনজিতের মা চম্পা মাঝি বলেন, “আমার ছেলে একটু নেশাভান করে। গার্ডেনে গিয়েছিল বন্ধুদের সঙ্গে। দারোয়ানরা দেখতে পেয়ে তাড়া করে। তখনই ভয়ে ওরা গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে দেয়। ওরা মোট তিনজন ছিল। ওদের মধ্যেই একজনের মুখ থেকে শুনলাম ও আমার ছেলেকে ঝাঁপ দিতে দেখেছিল। তারপর আর দেখতে পায়নি। গঙ্গার ধার থেকে ওর জুতো পাওয়া গিয়েছে। দারোয়ান যদি তাড়া না করত তাহলে ওরা ঝাঁপ দিত না। ধরে নিয়ে গেলে আমরা ছাড়িয়ে আনতে পারতাম আইন মেনে। এখন আমরা কী করব। আমাদের ছেলে চলে গেলে আর তো কেউ নেই। ও সম্প্রতি পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে কাজের খোঁজ করছিল। এখন তো সব শেষে হয়ে গেল।”