হাওড়া: আবারও প্রকাশ্যে গুলি হাওড়ায় (Howrah)। এবার হাওড়ার দাশনগরে ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে আচমকা গুলি ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন তিনি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশের জালে দুই দুষ্কৃতী।
বৃহস্পতিবার, ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় স্বর্ণদীপ রায়চৌধুরী ও কমল দে নামে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে জগাছা থানার পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে একটি সেভেন এম এম পিস্তল ও তিনটি ওয়ান শটার বন্দুক উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃতরা জগাছা থানা এলাকার ধারসায় গা-ঢাকা দিয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় অভিযান চালায় পুলিশ। তোলাবাজির টাকা না পাওয়ায় ওই ব্যবসায়ীকে খুনরে পরিকল্পনা করে দুষ্কৃতীরা অন্তত এমনটাই অনুমান তদন্তকারীদের।
জানা গিয়েছে, দেশচন্দ্র দে নামে বছর পঁয়ত্রিশের ওই ব্যবসায়ী দাশনগর শিয়ালডাঙা এলাকার ওই নিজের কারখানায় ছিলেন। কাজের ফাঁকে টিফিন খাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন রাস্তায়। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তিনি কারখানা থেকে বেরতে আচমকা তাঁর কাছে এসে দাঁড়ায় একটি মোটর বাইক। কিছু বুঝে ওঠার আগে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তিন দুষ্কৃতী ছিলেন বলে তাঁর অভিযোগ। এক রাউন্ড গুলি চালায় তারা। তবে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। গুলির শব্দে সবাই বেরিয়ে এলে তড়িঘড়ি বাইক নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
কিন্তু কে বা কারা তাঁকে লক্ষ্য করে এভাবে গুলি চালালে তা কিছুই বুঝতে পারছেন না তিনি বলে জানান ওই ব্যবসায়ী। এদিন এই ঘটনাটি ঘটে ঠিক দাশনগরের ইছাপুর চাষির মাঠ এলাকায়। ঘটনার পরই দাসনগর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যবসায়ী। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। দাশনগর থানার পুলিশ তদন্তে নেমে সন্দেহভাজন ১ ব্যক্তিকে আটক করে।
ইছাপুর শিয়ালডাঙাতেই ওই ব্যবসায়ীর লেদের কারখানা। তাছাড়া ওই এলাকারই বাসিন্দা তিনি। তাঁর উপর আচমকা এই হানায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
প্রসঙ্গত, দু’দিন আগেই হাওড়ার নাজিরগঞ্জ খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয় হাওড়ার তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সম্পাদককে। সোমবার রাতে তিনি যখন বাড়ির সামনে বসে ছিলেন, সেই সময় দুষ্কৃতীরা গুলি করে চম্পট দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তৃণমূল নেতাকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় হাওড়ার আন্দুলের এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। তার আগে গত শনিবার রাতে ক্যানিংয়ের নিকারীঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলেখালি গ্রামে নিজের বাড়ির কাছেই গুলিবিদ্ধ হন ক্যানিংয়ের নিকারীঘাটা অঞ্চল যুব তৃণমূল সভাপতি মহরম শেখ। এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সেদিন গভীর রাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।
হাওড়ার গুলিকাণ্ডের দু’দিন কাটতে না কাটতেই আবারও শুট আউটের ঘটনা ঘটল জেলায়। শিয়ালডাঙ্গার ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় হাওড়ায় আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: BJP Leader Murder: বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে খুন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার ৩ তৃণমূল সমর্থক