বেলুড়: নিত্যদিনের মতো গঙ্গার ঘাটে গিয়েছিলেন সকলে। সেই সময় জলে ভাসতে দেখা যায় এক যুবককে। তৎক্ষনাত প্রতিবেশীরা খবর দেয় বেলুড় থানায়। ডুবুরি নামিয়ে উদ্ধার করা দেহ। পরে জানতে পারা যায় তাঁর পরিচয়।
বেলুড়ের গঙ্গা থেকে রহস্যজনকভাবে উদ্ধার হল এক চিকিৎসকের মৃতদেহ। শুধু তাই নয়, গঙ্গার জলে ভাসতে থাকা দেহটি উদ্ধারের পর দেখা যায়, ঘাটেই রাখা রয়েছে চিকিৎসকের স্কুটি ও ব্যাগ। যা দেখেই পুলিশ ওই চিকিৎসককে সনাক্ত করে। চিকিৎসকের ব্যাগের ভিতর থেকে মেলে, একটি মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন ও পরিচয়পত্র।
পরিচয়পত্র দেখে পুলিশ জানতে পারেছে ওই চিকিৎসকের নাম সৌরভ সাহা রায় (২৫)। বেলুড় বাজারে থাকেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, রহস্য আরও ঘনীভূত হয় তখন, যখন গঙ্গার ঘাটে দু’ জোড়া জামা ও দু’ জোড়া জুতো পড়ে থাকায়। পুলিশের অনুমান, ওই চিকিৎসকের সঙ্গে আরও কোনও ব্যক্তি ছিলেন। তবে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ওই দ্বিতীয় ব্যক্তির খোঁজ পায়নি পুলিশ। তদন্তকারীরা মনে করছেন, হয় ওই দ্বিতীয় ব্যক্তি হয় গঙ্গায় ডুবে গিয়েছেন নয়ত পালিয়ে গিয়েছেন। বর্তমানে ওই দ্বিতীয় ব্যক্তিরই খোঁজ শুরু করেছে বেলুড় থানা।
কী ঘটেছে?
শনিবার সকাল ৭টা নাগাদ বেলুড়ের জগন্নাথ ঘাটের কাছে গঙ্গায় এক যুবকের দেহ ভাসতে দেখেন ঘাটে স্নান করতে আসা অন্যান্যরা। তাঁরাই বেলুড় থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে ডুবুরি নামিয়ে দেহটি উদ্ধার করার পরই যুবকের পরিচয় জানা যায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই চিকিৎসকের গঙ্গায় ডুবে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু পুলিশকে ভাবাচ্ছে অপর আর এক জনের উপস্থিতি।
মৃত চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ জানতে পারে, তাঁর বাবা ও মা দু’জনেই উত্তরবঙ্গের কার্শিয়াংয়ে থাকেন। তাঁর বাবা ও মা দু’জনেই চিকিৎসক। মৃত সৌরভ বেলুড় বাজারে তাঁর মামিমা ও এক সঙ্গীর সঙ্গে থাকেন। এখানেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। সৌরভ কি তাহলে সেই সঙ্গীর শনিবার সাতসকালে স্কুটিতে চেপে গঙ্গায় গিয়েছিলেন চিকিৎসক? দু’জনে কি গঙ্গায় স্নান করতে নেমেছিলেন? স্নান করতে গিয়েই কি চিকিৎসক ডুবে গিয়েছেন? নাকি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে। একই সঙ্গে উঠছে আরও প্রশ্ন যে তাহলে কি তাঁর সঙ্গীও গঙ্গায় স্নান করতে নেমে ডুবে গিয়েছেন?
ইতিমধ্যে মৃত চিকিৎসকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ও পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে এই প্রশ্নগুলিরই উত্তর খুঁজছে পুলিশ। তবে চিকিৎসকের পরিবারের তরফে এই ঘটনা সম্পর্কে কেউ মুখ খুলতে চাননি।