হাওড়া: দিনে-দুপুরে ছিনতাই। শুধু ছিনতাই বলা ভুল। প্রকাশ্য রাস্তায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে অভিনব কায়দায় এক মহিলার গা থেকে সোনার গহনা ছিনতাই করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। আর ঘটনার বিবরণ শুনে অনেকেই জানালেন, গত ৬০ বছরেও প্রকাশ্য দিবালোকে এ ধরনের ছিনতাই তাঁরা দেখেননি।
হাওড়ার ঘটনা। শনিবার সকালে আন্দুল রোডের গেসকিন গেটের কাছে বি গার্ডেন থানা থেকে মাত্র একশো মিটার দূরে ঘটেছে। জানা গিয়েছে, মামনি চক্রবর্তী নামে এক আইসিডিএস কর্মী কাজ সেরে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। মামনি দেবীর বাড়ি ১৬৮/৯ নম্বর আন্দুল রোডের ধারের একটি গলির ভিতরে। যে গলিতে মহিলার বাড়ি সেই গলির মুখেই একেবারে বাড়ির সামনেই ঘটেছে ঘটনাটি।
মামনি দেবী জানিয়েছেন, বাড়ির গলির মুখে আসতেই দু’টি বাইকে করে চার যুবক তাঁকে ঘিরে ধরে। তাঁরা ওই মহিলাকে পুলিশের লোক বলে পরিচয় দেয়। এরপর ওই যুবকরা মহিলাকে পরামর্শ দেয়, এভাবে প্রকাশ্য রাস্তায় সোনার গহনা পড়ে বেরেনো ভাল নয়। গহনা ছিনতাই হয়ে যেতে পারে। মহিলা যেন তাঁর গায়ের গহনাগুলিই কাগজে মুড়ে তাঁর হাতে থাকা ব্যাগে নিয়ে নেন।
মামনি দেবীর বক্তব্য, তিনি রাজি না হলে যুবকরা নিজেদের পুলিশ বলে জোর করে তাঁকে দিয়ে হাতের সোনার চুরি গুলি খোলায়। এরপর একটি কাগজে মুড়ে নিতে বলে তারা। এমনকী ওই যুবক মহিলার থেকে চুরিগুলি রীতিমতো কেড়ে নিয়ে, নিজেই একটি কাগজে মোড়ে। তারপর মহিলার চোখে ধুলো দিয়ে অপর একটি কাগজে মোড়া ২টো সিটি গোল্ডের চুরি তাঁর হাতে ধরিয়ে দিয়ে, দু’টি বাইকে চেপে নিমেশের মধ্যে চম্পট দেয় চার জনই।
তৎক্ষনাত মহিলা চলে যান পুলিশের কাছে। মামনিদেবীর বাড়ির গলির পাশেই থাকা একটি খাবার হোটেলে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বি গার্ডেন থানা। এদিন মামনি দেবী জানান, বি গার্ডেনের কোলে মার্কেটের কাছে থাকা আইসিডিএসের অফিসে কাজ সেরে অন্যান্য দিনের মতো হেঁটেই বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু এরকম একটা ঘটনা ঘটে যাবে তা ভাবতেও পারেননি। আর পাঁচটা মহিলার মতো সোনার চুরি পড়ে তিনিও বাইরে বেরোন। কিন্তু প্রকাশ্য দিবালোকে বাড়ির সামনে পুলিশ পরিচয় দিয়ে এমন ঘটনা ঘটে যাবে তা কল্পনাও করতে পারছেন না।
পুলিশ সূত্রে খবর, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, চার যুবকের পোশাক অত্যন্ত ভদ্র। দেখে মনেই হবে না এরা ছিনতাইবাজ। পোশাক দেখে সাধারণ মানুষ এদের পুলিশ বলেই ভুল করবে।