বাকসাড়া: লাল-হলদে দোতলা বাড়ি। শুক্রবার সকাল থেকে সেই বাড়ির সামনেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ভিড়। অত্যুৎসাহী এলাকাবাসীদের দেখা মিললেও, সকাল থেকে দেখা মিলছিল না বাড়ির কোনও সদস্যদের। এই বাড়িতেই থাকেন নিয়োগ দুর্নীতিতে সাক্ষী গোপাল দলপতির দ্বিতীয় স্ত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের বাবার বাড়ি। বর্তমানে ওই বাড়িতে থাকেন তাঁর বাবা- মা ও বোন। বাড়িতে সকাল থেকেই কাউকে দেখা যায়নি। পরে দোতলার বারান্দা থেকে হৈমন্তীর মা জানিয়েছিলেন, তাঁর বড় মেয়ে মারা গিয়েছে। গোপালের সঙ্গে বিয়ে তাঁরা মেনে নিতে পারেননি। এমনকী গোপাল কী করেন, সেটাও জানেন না হৈমন্তীর মা। তাঁর দাবি, মেয়ে ভালবেসে বিয়ে করেছে, তাই আর কিছু জানার প্রয়োজন বোধ করেননি। তবে, প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, এই বাড়িতে কয়েকবছর আগে নিত্য যাতায়াত ছিল গোপালের। বিয়েতে এলাহি আয়োজনও করা হয়েছিল। পাড়ার লোক পাত পেতে খেয়েওছিলেন। এরকমই এক বাসিন্দার সঙ্গে দেখা হল। তিনি অবশ্য কিছুটা এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁর কথায়, “একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকত দেখেছি। এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারব না।”
আরেক প্রতিবেশী অবশ্য সবটা বলেছেন। তিনি বলেন, “হৈমন্তীকে চিনব না মানে কী! ওর বিয়ের সময়ে আমাদের নিমন্ত্রণ করল, খাওয়াদাওয়া করলাম, আবার কী! গোপালকেও দেখেছি। ছোট থেকে দেখছি হৈমন্তীকে।”
তিনি যখন কথাগুলো বলছিলেন, পাশ থেকে অবশ্য একজন সাবধান করছিলেন, কারণ তিনি যদি এসব বলে কোনও ঝামেলায় ফেঁসে যান। তবে সেই পরামর্শ শোনেননি ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, “কেন বলব না, এত বড় দুর্নীতি, এত লোকের ক্ষতি হয়েছে, এত ছেলেমেয়ে কাঁদছে…বলতে তো কোনও বাধা নেই।”
হৈমন্তী আসলে গ্ল্যামার জগতে আসার জন্য স্ট্রাগল করছিলেন। রাতারাতি লাইমলাইটে এসেছেন তিনি, তবে অন্যভাবে! যে মেয়ে ছোটো থেকে পাড়ায় বেড়ে উঠল, তার নামেই নিত্য নতুন তথ্য শুনে অবাক হচ্ছেন বইকি প্রতিবেশীরা।