কলকাতা: সপ্তাহ খানেক গা ঢাকা দিয়েছিলেন। লালবাজারের তরফে জারি করা হয়েছিল লুকআউট নোটিস। অবশেষে জালে পান্ডে ব্রাদার্স। শিবপুরে অভিজাত আবাসন ও গাড়ি থেক টাকা উদ্ধারের ঘটনায় শৈলেশ পান্ডে ও তাঁর দাদা অরবিন্দ পান্ডে ও রোহিত পান্ডে নামে আরও এক ভাইকে গ্রেফতার করল পুলিশ। গুজরাত ও ওড়িশায় একযোগে অভিযান চালিয়ে মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সূত্রে খবর।
সপ্তাহের শুরুতেই শিবপুরে একটি অভিজাত আবাসনে হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তকারীরা। একটি গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় নগদ টাকা, সোনা ও হিরের গয়না। এরপর রবিবার সন্ধ্যায় শিবপুরের অপ্রকাশ মুখার্জি লেনের আবাসনে হানা দেন কলকাতা পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখার কর্তারা। তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। রাত ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত চলে তল্লাশি ও টাকা গোনার কাজ। উদ্ধার হয় ৫ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রচুর গয়না।
তিন দফায় শৈলেশ পান্ডে ও তাঁর অরবিন্দের ফ্ল্যাটে যান তদন্তকারীরা। নগদে ৮ কোটি ১৫ লক্ষ ছাড়াও দুটি ফ্রিজ করা অ্যাকাউন্টে আরও ২০ কোটি টাকা পাওয়া যায় বলে খবর। এরপর স্ট্র্যান্ড রোডের একটি বহুতল আবাসনেও যান তাঁরা। ১০ তলায় রয়েছে শৈলেশের ফ্ল্যাট। শৈলেশের আরও ১৭টি অ্যাকাউন্টের খোঁজ মেলে। সেখান থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল, শৈলেশ পান্ডে পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। পরে জানা যায় সেটি ভুল। এই কোটি কোটি টাকার উৎস কী? তদন্তকারীরা মনে করছেন অনলাইন প্রতারণা চালাতেন পান্ডে ব্রাদার্স। টাকা উদ্ধার হলেও খোঁজ মিলছিল না তাঁদের। এরপর তাঁদের বিরুদ্ধে জারি হয় লুক আউট নোটিস। শেষমেশ জালে।
মামলার প্রেক্ষাপট
অক্টোবর মাসে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের নরেন্দ্রপুর শাখার তরফে হেয়ার স্ট্রিট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। মূলত ওই শাখার দুই অ্যাকাউন্টের লেনদেন নিয়ে সন্দেহ হয় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। দিনে দিনে কয়েক হাজার টাকার লেনদেন হত। এরপর ওই অ্যাকাউন্টের দুই হোল্ডারকে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁদের কথাবার্তাতে অসঙ্গতি থাকায় হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। এরপরই কেঁচো খুড়তে কেউটের সন্ধান।