হাওড়া: বৃষ্টি কমেছে, কমেছে ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণও। কিছুটা হলেও আমতার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জলস্তর কিছুটা হলেও কমেছে।
দু’মাস আগে আমতা (Amta) দু’নম্বর ব্লকের যে সমস্ত গ্রামগুলো সম্পূর্ণ জলের তলায় ছিল, এবারে সেই সমস্ত গ্রামে আংশিক জল ঢুকেছে। তবে সে অর্থে জলস্তর বাড়েনি। যদিও এই এলাকায় চাষের জমির প্রায় পুরোটাই জলের তলায়।
আমতার তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত পাল রামপুর খালে বাঁধ দেওয়ার ব্যাপারে তদারকি করছেন। এই খাল দিয়ে এই এলাকায় বন্যার জল ডুকছে। রামপুর খালের বাঁধগুলোতে নিজে তদারকি করে মাটির বস্তা ফেলে কোনওক্রমে জল আটকাচ্ছেন বিধায়ক।
অপরদিকে ডিভিসি অন্যান্য দিনের তুলনায় কম জল ছাড়ায় আমতা ও উদয়নারায়ণপুরের বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। ৬৮.৪০০ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ।
দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কমানো হয়েছে সোমবার সকালে । রবিবার সকালে ছাড়া হচ্ছিল ১,১২,১০০ কিউসেক জল । রবিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ছাড়া হচ্ছিল ১,০৪,৪০০ কিউসেক জল । সোমবার সকালে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কমানো হয়েছে । সোমবার সকালে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ছাড়া হচ্ছে ৬৮,৪০০ কিউসেক জল ।
নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দফায় দফায় কমানো হচ্ছে জল ছাড়ার পরিমাণ । সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধীরে ধীরে আরও কমানো হবে জল ছাড়ার পরিমাণ। ৫০,০০০ কিউসেকের নীচে জল ছাড়ার পরিমাণ হলেই রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
রাজ্যের বন্যা উপদ্রুত জেলাগুলির মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেই বৈঠকেই বন্যা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সেনা নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মোট ৩ জেলায় ৮ কলম সেনা আপাতত নামানো হয়। ৩ কলম করে সেনা পশ্চিম বর্ধমান ও হুগলিতে, বাকি ২ কলম সেনা হাওড়া জেলায়।
প্রায় ৮ লক্ষ মানুষকে উপদ্রুত এলাকা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে। বানভাসি বাংলায় ‘ম্যান মেড’ তত্ত্ব আগেই খাড়া করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাশাপাশি, ঝাড়খণ্ডের বৃষ্টিকেও দায়ী করেছেন বাংলার বন্যা পরিস্থিতির জন্য। এবার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ফের দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (DVC) বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দাগেন তিনি। পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝালেন ঠিক কত কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি। এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসি-র কাছে ক্ষতিপূরণ (Compensation) চাইতে হতে পারে বলেও উল্লেখ করলেন মমতা। আরামবাগে (Arambagh) গিয়ে তিনি বলেন, ‘ডিভিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে হতে পারে।’ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘সব টাকা তো জলেই চলে যাচ্ছে।’
মমতা আরামবাগে দাঁড়িয়ে বলেন, ডিভিসি আর খাড়খণ্ডের জন্যই বাংলায় এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাঁর দাবি, ডিভিসির যদি বছরে চারবার এভাবে জল ছাড়ে, তাহলে বহু মানুষের ক্ষতি হয়।
আরও পড়ুন: Flood in Bengal: মাথার ওপর ত্রিপলটুকুও জোটেনি, নিজেদের ঘরের শেষ রসদ দিয়েই পেট চলছে, কোথায় প্রশাসন?