হাওড়া: মালিকপক্ষের সঙ্গে ভাড়াটের বিবাদকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হাওড়া। ভাড়াটে উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে চলা ঝামেলার নিস্পত্তি ঘটাতে তৈরি হয় উত্তেজনা। জানা গিয়েছে, গভীর রাতে জেসিবি মেশিন নিয়ে আসে মালিক পক্ষ। ভাড়াটের ঘর ভাঙতে উদ্যত হয় তারা। এরপর বিবাদ পৌঁছায় চরমে। প্রতিবাদে ভাড়াটে পক্ষরা আগুন লাগিয়ে দেয় জেসিবিটিতে। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে সেটি। এরপরও থামেনি ঝামেলা। পরিস্থিতি যখন আরও বিশৃঙ্খল অবস্থায় পৌঁছায় সেই সময় মালিক পক্ষ দু’রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। আটক করা হয় কয়েকজনকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ভোর বেলা। এলাকা এখনও থমথমে।
কী ঘটেছে?
হাওড়ার জগাছা থানার অন্তর্গত উনসানি এলাকার ঘটনা। কৃষ্ণা দাস সহ মোট পাঁচটি পরিবার ভাড়া থাকত ওই এলাকায়। তারা প্রায় চল্লিশ -পঞ্চাশ বছর ধরে সেখানে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। অভিযোগ মালিকপক্ষ দীর্ঘদিন সেখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করতে চাইলেও উঠছিলেন না তাঁরা। পরিস্থিতি পৌঁছায় চরমে। মালিকপক্ষর সঙ্গে ভাড়াটেদের বিবাদ প্রায় লেগেই থাকত।
অভিযোগ, এরপর শুক্রবার মধ্যরাতে মালিকপক্ষর ভাই তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও তার দলবল জেসিবি মেশিন নিয়ে চড়াও হয় ভাড়াটেদের উপর। বাড়িতে ঢুকে রীতিমত ভাঙচুর ও তান্ডব চালায় তারা। এমনকী হাত তোলা হয় মহিলাদের উপরও। জবরদস্তি ভাড়াটিয়াদের বাড়ি থেকে বের করে ভেঙে-গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ঘর। এখানেই শেষ নয় দুষ্কৃতীরা সিসিটিভি ক্যামেরাও ভাঙচুর করে।
উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে। এরপর ক্ষিপ্ত ভাড়াটেরা বুলডোজারে আগুন ধরিয়ে দেয়। দাউ-দাউ করে জ্বলতে থাকে সেটি। তখন ওই দুষ্কৃতীরা দু রাউন্ড গুলি চালায় বলেও অভিযোগ। এলাকায় জগাছা থানার বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যদিও জমির মালিক ও তার লোকজন পলাতক। তাদের খোঁজে চলছে তল্লাশি। এলাকায় মুহূর্তে চাপা উত্তেজনা রয়েছে রয়েছে পুলিশ পিকেট।
কৃষ্ণা দাস নামে ওই মহিলা বলেন, “আমায় ধাক্কা দিয়ে মরে হুমকি দিয়ে বলছে প্রাণে মেরে ফেলব। এরপর আমার ছেলের উপরে বন্দুক ধরেছে। আমরা পাঁচটা পরিবার চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর ধরে থাকি। কী অত্যাচার করছে ওরা আমাদের উপর!” বিশ্বজিৎ দাস নামে এক ব্যক্তি বলেন, “রাত দুটো নাগাদ কয়েকটি ছেলে বাঁশ, লাঠি নিয়ে এসে টালির ছাদে মারতে শুরু করে। এরপর জেসিবি মেশিন ডেকে নিয়ে আসে। তারপর বাড়ি ভাঙা শুরু করে। তখন ঘরের ভিতর যারা ছিলেন তারা ভয়ে বেরিয়ে চলে আসে। পাড়ার একজন ভিডিও করছিল বলে বন্দুক দিয়ে মারে মাথায়। এরা সবাই তৃণমূলের লোকজন। স্থানীয় তৃণমূলে নেতা।”
আরও পড়ুন: WB Govt: সরকারি জমি থেকে দ্রুত ‘অবৈধ’ ধর্মীয় নির্মাণ সরাতে জেলাশাসকদের নির্দেশ, তালিকায় ৮ জেলা