হাওড়া: বৃষ্টি থামার ১০ঘণ্টা পরেও এলাকার পর এলাকা জলমগ্ন। কোথাও হাঁটু অবদি তো কোথাও কোমর। জলযন্ত্রণায় নাকাল হাওড়াবাসী।
বৃহস্পতিবার রাতভর অতিভারী বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হাওড়া। শুক্রবার দুপুরের পর বৃষ্টির দমক কাটলেও জমা জলে যন্ত্রণায় পড়েছেন হাওড়ার একাধিক এলাকাবাসী। এদিন সকাল থেকেই হাওড়া টিকিয়াপাড়া কাডসেট, বেলুড় স্টেশন রেলওয়ে আন্ডারপাস, বাবু ডাঙ্গা, মহিনাথ পোরেল লেন, শালকিয়া, অক্ষয় চ্যাটার্জী লেন, ঘোষ পাড়া লেন, বামুনগাছি, বেলগাছিয়া অভয় রায় স্ট্রীট-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন। কোথাও জল যন্ত্রণায় সংসার চলছে খাটের ওপর। কোথাও খাবার জলের কলগুলি পর্যন্ত জলে ডুবে। জলমগ্ন খেলার মাঠ থেকে শুরু করে বাড়িঘর। বৃষ্টি থামার পর ১০ ঘণ্টা কেটে গেলেও এভাবেই জলমগ্ন হয়ে রয়েছে হাওড়ার একাধিক এলাকা।
বেলুড় স্টেশন আন্ডারপাস জলমগ্ন থাকায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পারাপার করে যাতায়াত করছেন মানুষজন। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। রেল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা বলে পুরসভাকে জানাতে। অন্যদিকে পুরসভা দায় ঠেলে রেলের ওপর। এই পরস্পর দায় ঠেলে দেওয়ার মধ্যেই জল ঠেলে পারাপার চলছে স্থানীয়দের। যদিও হাওড়ায় এই জলযন্ত্রণার সমাধানের বিষয়ে পুরসভার তরফে বিধায়ক তথা হাওড়া প্রশাসক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য গৌতম চৌধুরী জানান আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাওড়ায় ব্রিটিশ আমল থেকেই জল জমার সমস্যা রয়েছে। তবে আগের সরকারের তুলনায় বর্তমানে তাঁরা ‘অভূতপূর্ব উন্নতি’ করেছেন বলে দাবি গৌতমবাবুর। তিনি জানান, নানা জায়গায় পাম্পিং স্টেশন তৈরি হয়েছে। তবে কিছু এলাকার মানুষের দাবি ও ক্ষোভের কথা মেনে নেন তিনি।
স্থানীয়দের দাবি, এই জলযন্ত্রণার নেপথ্যে রয়েছে জিটি রোড উঁচু করা। এর ফলেই মূলত এই সমস্যা বেড়েছে এবং জলমগ্ন হয়ে পড়ছে এলাকা। এ ব্যাপারে বিধায়ক গৌতম চৌধুরীর ব্যাখ্য, “তৎকালীন সময়ে কিছুটা ভুলভ্রান্তি হয়ে ছিল। পরবর্তীকালে আমরা এটাকে শর্ট-আউট করেছি এবং মানুষকে উন্নত পরিষেবা দেবার জন্য অন্য এক প্ল্যানিং নেওয়া হয়েছে। যা একটু ব্যয়সাপেক্ষ এবং সে ব্যাপারে প্রশাসক মণ্ডলীর বৈঠকের পর এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগামী দিনে হাওড়া পুরসভার তরফ থেকে মানুষকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়া সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকেই নিখোঁজ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগী, কোথায় আছেন জানে না পরিবারও!
এই আশ্বাসবাণীর মধ্যেই কোমরবন্দি জল ঢেলে কাজে বেরচ্ছেন হাওড়ার একাধিক এলাকাবাসী।