হাওড়া: মহিলার রহস্যমৃত্যুর এক বছর ঘুরতে চলেছে। আর দিন চারেক। এরইমধ্যে পরিবারের হাতে আসে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে সামনে আসে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য। পরিবার সূত্রে খবর, সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরিবার জানতে পারে ওই মহিলার মৃত্যুর পিছনে হাত রয়েছে ছেলের। অভিযোগ, ঘটনার দিন মায়ের হাতের রান্না পছন্দ হয়নি ছেলের। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন যুবক। কথা কাটাকাটি, চিৎকার। আর এরপরই মাকে খুনের অভিযোগ ওঠে ছেলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে ধৃতকে গ্রেফতার করে শুক্রবার আদালতে তোলা হয়।
গত বছর ৯ অগস্ট সাঁকরাইলের চাঁপাতলায় শ্যামলী কাঁড়ারের (৫৬) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলেই সবকিছু ছিল তাঁর। সেই ঘটনার বছর ঘোরার আগে তাঁকে খুনের অভিযোগে ছেলে সরোজ কাঁড়ারকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে সাঁকরাইল থানার পুলিশ সরোজকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার ধৃতকে হাওড়া আদালতে তোলা হয়।
সাঁকরাইল থানার পুলিশ জানায়, গত বছর শ্যামলী কাঁড়ারকে মৃত অবস্থায় স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে যান ছেলে। সেখানে সরোজ দাবি করেন, তাঁর মা সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছেন। তাতেই বিপদ ঘটে গিয়েছে। চিকিৎসকরা শ্যামলীদেবীকে মৃত বলে জানান। এরপরই দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। সঙ্গে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলাও দায়ের করে পুলিশ।
সেই মৃত্যুর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, ওই মহিলাকে খুন করা হয়েছে। গলা টিপে খুনের একটা ইঙ্গিত পুলিশ পেয়েছিল। এরপরই তদন্ত শুরু করে। তাতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শ্যামলীদেবীর ছেলেই তাঁকে গলা টিপে মারেন বলে অভিযোগ। তবে কারণ শুনে হতবাক পুলিশও।
মায়ের রান্না মনের মত না হওয়ায় প্রায় প্রায়ই মায়ের সঙ্গে ছেলের ঝামেলা হত বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বছরখানেক আগে সেই ঝামেলার সময়ই ছেলে মাকে গলা টিপে খুন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ বছর জুলাই মাসের শেষের দিকে শ্যামলীদেবীর ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে পায় পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। বৃহস্পতিবার সরোজকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়ই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। শুধু সরোজ নন, ঘটনার দিন যে টোটোতে চাপিয়ে মাকে নিয়ে গিয়েছিলেন সরোজ, সেই টোটো চালককেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।