হাওড়া: গুলি করেই খুন করা হয়েছে ডোমজুড়ের অনুশ্রী হাজরাকে, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এল তেমনই তথ্য। সোমবার হাওড়া পুলিস মর্গে ময়না তদন্তের সময় নিহতের মাথা থেকে একটি গুলি বের হয়। অনুশ্রীর বাবার সরাসরি অভিযোগ জামাই চন্দন মাজির দিকেই। তাঁর দাবি, হয় চন্দন নিজে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। অথবা ভাড়াটে খুনি দিয়ে এই কাজ করিয়েছেন। পুলিশ যাতে যথাযথ তদন্ত করে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়, তেমনই আর্জি নিহতের বাবার।
ডোমজুড়ের সলপ হাজরাপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন অনুশ্রী (২৪)। অন্যদিকে সলপেরই বটতলা পাড়ার ছেলে চন্দন মাজি। বছর দেড়েক আগে তাঁদের বিয়ে হয়। নিজেরাই পছন্দ করে বাড়ির সম্মতিতে বিয়ে করেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। অনুশ্রী নাচ করতে খুব ভালবাসতেন। বিয়ের আগে কিছু না বললেও বিয়ের পরই শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে নাচ বন্ধ করার জন্য চাপ দিতেন বলে অভিযোগ। এমনকী এ নিয়ে ঝামেলা এত দূর গড়ায়, গায়ে হাত পর্যন্ত তোলে তাঁর। মাস ছয়েক আগে বাপের বাড়িও চলে আসেন অনুশ্রী। বিবাহ বিচ্ছেদের প্রক্রিয়াও শুরু হয় বলে সূত্রের খবর।
মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের চাকরির পাশাপাশি বাচ্চাদের নাচ শেখাতে শুরু করেন অনুশ্রী। এভাবেই তাঁর দিন কাটছিল। পরিবারের দাবি, রবিবার বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য অনুশ্রী সাইকেল বেরিয়েছিলেন। রাত ৮টা নাগাদ মায়ের সঙ্গে ফোনে তাঁর কথাও হয়। মাকে জানান, বাড়ি ফিরছেন।
এরইমধ্যে ঝালুয়ারবেড় এলাকায় তাঁর অপর ধারাল অস্ত্রের হামলা হয়। একসারা রোড থেকে অনুশ্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহটি যখন উদ্ধার হয়, কাপড় দিয়ে চোখ বাঁধা ছিল। দেহের পাশে পড়েছিল একটি ভ্যানিটি ব্যাগ। ব্যাগে আধার কার্ড দেখে পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। পরিবারকে ডোমজুড় থানার থেকে খবর দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় অনুশ্রীর স্বামী চন্দন মাজিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অনুশ্রীর সঙ্গে তাঁর একটা ঝামেলা চলছিল। সে কারণেই এই খুনের ঘটনা ঘটতে পারে। চন্দনকে মঙ্গলবার হাওড়া আদালতে তোলা হবে।