জলপাইগুড়ি: বৃহস্পতিবার ছিল তৃণমূলের শহিদ দিবস। সেই উপলক্ষে জেলা-জেলা সেজে উঠেছিল। কাতারে-কাতারে মানুষ এসে উপস্থিত হয়েছেন কলকাতায়। এর মধ্যে জলপাইগুড়িতে দেখা গেল ভিন্ন ছবি। স্কুলের মধ্যে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে শহিদ দিবস পালন। গোটা ঘটনার নিন্দায় সরব রাজনৈতিক মহল।
জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের সন্ন্যাসী কাটা গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত সন্তোষ পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই স্কুল চত্বরে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটা করে শহীদ তর্পণ করে তৃণমূল। এ দিন, স্থানীয় তৃণমূল নেতা মকসেদ আলমের নেতৃত্বে তৃণমূল সাপোর্টারস কমিউনিটি নামে একটি সংগঠন শহিদ দিবস অনুষ্ঠান পালন করে। অভিযোগ, এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে কোনও প্রয়োজনীয় অনুমতি নেয়নি তৃণমূল নেতারা। তাঁরা তাঁদের ব্যক্তিগত প্রভাব খাঁটিয়ে স্কুল চত্বরে শহিদ দিবস পালন করেছে। অনুষ্ঠান শেষে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজন করে তৃণমূল নেতারা। এ দিন, প্রায় দুপুর পর্যন্ত চলে অনুষ্ঠান বলে অভিযোগ।
শহিদ দিবসের জেরে স্কুলে পঠন-পাঠন কার্যত বন্ধ ছিল। অনুষ্ঠান চলাকালীন পড়ুয়াদের শহিদ তর্পণ মঞ্চের আশেপাশে পড়ুয়াদের ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে।
এই বিষয়ে মকসেদ আলম বলেন, ‘এই স্কুলে এই নিয়ে একটানা তিন বছর ধরে আমরা শহিদ তর্পণ করে আসছি। আসলে সবার পক্ষে কলকাতা যাওয়া সম্ভব হয় না। তাই স্থানীয় কর্মীদের অনুরোধে আমরা এখানেই শহিদ দিবস পালন করলাম। স্কুলে রাজনৈতিক অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি খোলসা করে কিছু বলতে চাননি।’
বিজেপির সহ সভাপতি শ্যাম প্রসাদ বলেন, ‘শহিদ দিবস অনুষ্ঠানটি কংগ্রেসের। কিন্তু এই অনুষ্ঠান তৃণমূল হাইজ্যাক করে নিয়েছে। তৃণমূল দলের অভিধানে না বলে কিছু নেই। এরা কোনও আইন কানুন মানে না। তাই এদের পক্ষে সব কিছু করা সম্ভব। এরা শিক্ষা রাজনীতি সবটাকে একসঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে।’
নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক বিপ্লব ঝাঁ বলেন কার্যত স্কুল ছুটি দিয়ে স্কুল চত্তরে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের আমরা তীব্র নিন্দা করছি। এই জাতীয় অনুষ্ঠান করতে গেলে স্কুল ছুটি থাকা কালীন ডি আই কিংবা চেয়ারম্যানের অনুমতি সাপেক্ষে কোনও স্কুলে রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করা যায়। আমরা বিষয়টি ডি আই এর কাছে লিখিত ভাবে জানতে চাইবো। ঘটনায় ডি আই প্রাইমারি শ্যামল চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে আমি খোঁজ নেব।’