জলপাইগুড়ি: হড়পা বানে ভাসছে সিকিম, বড় বিপদ উত্তরবঙ্গে। নিখোঁজ সাধারণ মানুষ থেকে সেনা জওয়ানরা। তবে এই ছবি যে প্রথমবার দেখা গেল এমনটা নয়। তিস্তার রোষ আগেও দেখেছে উত্তরবঙ্গবাসী। ১৯৬৮ সালের ৪ অক্টোবর ছিল লক্ষ্মীপুজো। জলপাইগুড়িতে সেদিন সারাদিন টিপটিপ করে বৃষ্টি হচ্ছিল। রাতে তিস্তায় দেখা যায় হড়পা বান। তিস্তায় সেদিন জলপ্রবাহের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৮০০ কেউসেক ঘনমিটার প্রতি সেকেন্ডে। শহরের ভিতরে জলস্রোত ছিল প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার। ভয়াবহ অবস্থা হয়েছিল জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের। হাসপাতালের একতলা সম্পূর্ণভাবে ডুবে গিয়েছিল সেদিন। অনেক রোগীকেই বাঁচানো যায়নি।
ডুবে গিয়েছিল গোটা জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। রাতের আঁধার কেটে সকাল হতেই জলপাইগুড়ি ও আশেপাশের এলাকা দেখে শিউরে ওঠেন অনেকে। দেখা যায় জলে ভাসছে সারি সারি মানুষের দেহ, গরু, মোষ, কুকুর। এদিকে ওদিক পড়েছিল মানুষের দেহ। আকাশে উড়ছে শকুনের দল। সারা শহর সেদিন দুই থেকে সাড়ে চার মিটার জলের তলায় চলে গিয়েছিল। সূত্রের খবর, সেবার মারা গিয়েছিল ১৩৭০টি গরু।
সেইবারের বন্যায় জেলার ২১৬ জন মানুষের মৃত্যু হয়। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ৩ হাজার ৪৫৬টি বাড়ি। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল জলপাইগুড়ির তিস্তা সেতু। ফলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আজ থেকে প্রায় ৫৪ বছর আগে যাঁরা ওই দুর্যোগ প্রত্যক্ষ করেছিলেন বা তার গ্রাসে পড়েছিলেন তাঁরা মন থেকে এই দিনটি মুছে ফেলতে পারেননি। ভারতের বন্যার ইতিহাসের কথা উঠলেই সামনে আসে উত্তরবঙ্গের সেই ভয়াবহ দিনগুলির কথা। তবে ২০২২ সালের দুর্গাপুজোর বিসর্জনে খানিক একই ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছিল মালবাজারে। হড়পা বানে প্রাণে গিয়েছিল অনেক মানুষের।