ময়নাগুড়ি: বিয়ের তোড়জোড় চলছিল বাড়িতে। বুধবার ছিল আশীর্বাদের অনুষ্ঠান। পাত্রীপক্ষের বাড়ির লোকজনের আসার কথা। সেই মতো গতকাল নিজে হাতে সমস্ত বাজার করেছিলেন ময়নাগুড়ির রামশাই এলাকার বাসিন্দা বছর সাঁইত্রিশের চন্দন রায়। হবু শ্বশুরবাড়ির লোকজনের আপ্যায়নে কোনও ত্রুটি রাখতে চাননি তিনি। সঠিক সময়ে টোটোয় করে বাড়িতে বাজার পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু বাজার বাড়ি পর্যন্ত এলেও, চন্দন আর বাড়ি ফেরেননি। প্রথমে বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও, অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও যখন চন্দনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন দুশ্চিন্তা বাড়ে পরিবারের মনে। গতরাতে হন্যে হয়ে চন্দনের খোঁজ শুরু করেন তাঁরা। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজখবর নেন। কিন্তু কোথাও ইতিবাচক কিছু ফল হয় না। শেষে যখন খবরটা এল, তখন যেন একেবারে মাথায় বাজ পড়ার জোগাড় বাড়ির লোকজনের।
থানা থেকেই প্রথম খবর যায় চন্দনের পরিবারের কাছে। বুধবার সকালে নিউ ময়নাগুড়ি জিআরপি থানা থেকে খবর দেওয়া হয়, একটি দেহ উদ্ধার হয়েছে। থানায় গিয়ে দেহটি শনাক্ত করার জন্য বলা হয়। এরপর চন্দনের পরিবারের লোকেরা থানায় গিয়ে দেহটি শনাক্ত করেন। গোটা পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কী থেকে কী হয়ে গেল, ভেবে কূল কিনারা পাচ্ছেন না বাড়ির লোকেরা। শোকবিহ্বল চন্দনের পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-পরিজনরাও। পুলিশ দেহটিকে আজই জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের হাতে দেহটি তুলে দেয় পুলিশ।
কীভাবে এই অঘটন ঘটে গেল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মৃত্যুই বা হল কীভাবে, তাও জানা যায়নি এখনও। তবে যুবকের কপালের দিকে ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। মৃতের দাদা বাসুদেব রায় জানাচ্ছেন, ‘এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক মেয়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল চন্দনের। সবকিছু ঠিকঠাকই এগোচ্ছিল। আজ বাড়িতে আশীর্বাদ ছিল। গতকাল নিজে হাতেই সব বাজার করতে গিয়েছিল। কিন্তু তারপর আর ফিরল না। কী ঘটল, কেন ঘটল, তা আমরা কেউই ঠিক বুঝতে পারছি না।’