ধূপগুড়ি : ‘আমি ভোটের কথা বলতে আসিনি।’ মঙ্গলবার ধূপগুড়ির সভা মঞ্চ থেকে বক্তব্যের শুরুতে ও মাঝে একাধিকবার এ কথা বলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ভোট প্রসঙ্গ এ দিন ঘুরে ফিরে এল তাঁর বক্তব্যে। গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে উত্তরবঙ্গে ঘাসফুল অনেকটাই ফিকে। একুশের নির্বাচনে রাজ্যে যখন নিরঙ্কুশ জয় এসেছে তৃণমূলের হাতে, তখনও উত্তরবঙ্গে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আসন পেয়েছিল বিজেপি। সেই ফলাফলের দায় এ দিন নিজের দলের কাঁধেই নিলেন অভিষেক।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে এ দিন একগুচ্ছ বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। সেই সঙ্গে ব্যর্থতার দায় নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের গাফিলতি ছিল। স্বীকার করতে আমার কোনও অসুবিধা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হয়ত নিজেদের দোষেই আপনাদের ভালবাসা হারিয়েছি, আস্থা হারিয়েছি।’ তাই এ দিন ক্ষমা চাইতে এসেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
উত্তরের জেলাগুলিকে যে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে, সে কথা এ দিন বুঝিয়ে দেন অভিষেক। তিনি উল্লেখ করেন, পরপর উত্তরের জেলাগুলিতে সফরে যাবেন তিনি। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে একাধিক আসন পেয়েছিল বিজেপি। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ির মতো আসনগুলিতে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনে অপেক্ষাকৃত ভাল ফল হলেও দিনহাটা, মাথাভাঙা, কোচবিহার দক্ষিণ বা উত্তর, নাটাবাড়ি, তুফানগঞ্জ, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ির মতো একগুচ্ছ আসনে বিজেপির কাছে হেরে যান তৃণমূল প্রার্থীরা। সেই ফলের কথা এ দিন কর্মীদের মনে করিয়ে দেন অভিষেক। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উদ্দেশে তিনি বার্তা দেন, গ্যাস কিংবা তেলের বর্ধিত দামে আসলে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার মাশুল দিতে হচ্ছে।
মানুষের আস্থা ফেরাতে মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে হবে বলে উল্লেখ করেন সাংসদ। তিনি বার্তা দেন, চার চাকার গাড়িতে না ঘুরে জেলার দায়িত্বে থাকা নেতাদের পায়ে হেঁটে এলাকায় পৌঁছে যেতে হবে। গত এক বছরে অর্থাৎ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে কতজন বুথে বুথে ঘুরেছেন, সেই প্রমাণও দেখতে চেয়েছেন অভিষেক। তাঁর নির্দেশ, ২১ জুলাই কলকাতায় যাওয়ার সময় জেলা সভাপতি বা ব্লক সভাপতিদের ছবি নিয়ে গিয়ে দেখাতে হবে তাঁরা কতগুলি বুথে ঘুরেছেন।