জলপাইগুড়ি: বিছানা তুলতে গিয়ে খেলেন সাপের কামড়। এরপর সাপ নিয়ে সোজা হাসপাতালে (Hospital) চলে গেলেন ব্যক্তি।
জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) বাসিন্দা কালীচরণ রায় (২৩)। আজ সকালে বিছানা তুলতে গিয়ে দেখেন বিছানায় রয়েছে একটি সাপ (Sanke)। কালীচরণবাবুর চিৎকার শুনে পরিবারের সকলে সেখানে চলে আসেন। এরপর লাঠি দিয়ে সাপটি ধরতে যাওয়ায় কালীচরণ রায়ের হাতে সেটি কামড়ে দেয়। পরে বাড়ির সকলে মিলে সাপটিকে ধরে বস্তাবন্দী করে ফেলে।
জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। হাসপাতালের তরফে খবর দেওয়া হয় জলপাইগুড়ি পরিবেশ কর্মী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরিকে। খবর পেয়ে বিশ্বজিৎ বাবু হাসপাতাল ফিরে এসে দেখেন সাপটি একটি কমন ট্রিংকেট প্রজাতির। এরপর রোগীর পরিবার ও হাসপাতাল চত্ত্বরে থাকা সকলের উদ্দেশ্যে সচেতনতা প্রচার করে তিনি। বলেন, “সাপ কামড়ালে অজথা সাপ ধরে সময় নষ্ট করবেন না। কারণ সাপ দেখে রোগীর চিকিৎসা হয় না। সাপে কাটা রোগীর নির্দিষ্ট নিয়মে চিকিৎসা হয়। আর সাপ ধরে সময় নষ্ট করলে যদি বিষধর সাপ কামড় দিয়ে থাকে তবে রোগীর বিপদ বাড়তে থাকে। একইসঙ্গে যিনি সাপ ধরছেন তাকে সাপ কামড়ে দিলে আরও সমস্যা বাড়বে। তবে আজকের সাপটি একটি কমন ট্রিংকেট স্নেক, বাংলায় একে পংখীরাজ সাপ বলে। এটি একটি নির্বিষ প্রজাতির সাপ।”
উল্লেখ্য,ঠিক দু’মাস আগে পাণ্ডুয়া ব্লকের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে সাপে কামড়ায়। হাসপাতালের চিকিৎসায় ভরসা না রেখে ওই নাবালিকার বাড়ির সদস্যরা ছোট্ট মেয়েটিকে নিয়ে যায় ওঝার কাছে। অকালে প্রাণ চলে যায় মেয়েটির। সেই সময় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সচেতনার অভাব রয়েছে এখনও বলে প্রচার শুরু হয়।
পরে আর সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় না। বৃদ্ধাকে সাপে কামড়ানোর পর সোজা তিনি সাপ নিয়ে চলে গেলেন হাসপাতালে। ‘সচেতনতা ফিরছে’ বলছে ব্লক প্রশাসন।
পান্ডুয়ার বৈঁচি রায়পাড়ার বছর ষাটেকের বাসিন্দা রেনু রায়। তাঁকে বিষধর সাপে কামরায়। নারকেল গাছের বাকল পরিস্কার করার সময় তার বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলে ছোবল মারে একটি সাপ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে স্থানীয় বৈঁচি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় পৌঢ়াকে। চিকিৎসা শুরু হওয়ায় পর জানা যায় সুস্থই আছেন বৃদ্ধা। শুধু তাই নয় বৃদ্ধার পরিবার সাপটিকে বস্তায় ভরে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডাক্তারদের দেখায়।
পান্ডুয়া হাসোতালের বিএমওএইচ মঞ্জুর হোসেন বলেন, ” সাপে কামড়ানোর পর প্রথমে সবাই ওঝার কাছে ঝাড়ফুঁক করাতে যায়। যার কারণে অনেকের অবস্থা খারাপ হয়েছে। মৃত্যুও হয়েছে অধিকাংশে। তবে এখন সচেতনতা শিবির করা হয়েছে। মানুষেদের মধ্যে প্রচার বাড়ানো হয়েছে। এখন জনগণ এতটাই সচেতন হয়েছে যে সাপ ধরে নিয়ে চলে আসছে। এই সচেতনতা শিবির ফলপ্রসী হয়েছে। আগামীদিনে সচেতনতা বাড়াতে লাগাতার চলবে প্রচার।”