জলপাইগুড়ি: আলুর বন্ড দেওয়াকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা জলপাইগুড়িতে। শুক্রবার বিকেলে বন্ড বিলিকে কেন্দ্র করে তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয় জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গরালবাড়ি এলাকায় গঙ্গা কোল্ড স্টোরেজ চত্বরে। জলপাইগুড়িতে যে হিমঘরগুলি রয়েছে, সেগুলিতে শুক্রবার থেকে বন্ড দেওয়া শুরু হয়েছে। সেই নিয়ে গতরাত থেকেই প্রতিটি হিমঘরের বাইরে ভিড় ছিল। গরালবাড়ির গঙ্গা কোল্ড স্টোরেজের চিত্রটাও একইরকম। কিন্তু এদিন দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করার পরও বন্ড না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মানুষজন। আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তাঁরা। হিমঘরের বাইরে দুই জায়গায় আগুন জ্বালানো হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমঘর চত্বরে গিয়ে পৌঁছায় বিশাল পুলিশবাহিনী। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন তাঁরা। বিক্ষুব্ধ মানুষজনের একাংশ পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর বৃষ্টি করতে শুরু করেন বলেও প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। কার্যত রণক্ষেত্র তৈরি হয় এলাকায়। বিক্ষোভকারীদের হিমঘর চত্বর থেকে হঠাতে লাঠি উঁচিয়ে তাড়াল করেন পুলিশকর্মীরা। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেলও। শেষে পুলিশের চেষ্টায় বিক্ষোভকারীদের সেখান থেকে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তাঁরা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন হিমঘরের বাইরে আলুর বন্ডের জন্য। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বাইরে। একাধিক লাইন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। মাঝে একবার প্রশাসনের লোকজন এসে লাইন ঠিকঠাকও করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর হঠাৎ তাঁদের চলে যেতে বলা হয় সেখান থেকে। জানানো হয়, আলু বন্ড আজ আর দেওয়া হবে না। যা বন্ড ছিল, তা শেষ হয়ে গিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ‘এত বড় হিমঘর। ভিতরে পর্যাপ্ত জায়গা। তাহলে বাকি বন্ড গেল কোথায়?’ আর এই নিয়েই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন চাষীরা।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো জানাচ্ছেন, ‘কিছু মানুষের অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। তাঁরা বলছেন, বন্ডের টোকেন পাননি। আমরা শুনলাম, জায়গা শেষ হয়ে গিয়েছে। ওরা যেতে চাইছিল না, আমরা আস্তে আস্তে সরিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। দুই একজন পুলিশকর্মীর গায়ে ঢিল লেগেছে তবে আঘাত গুরুতর নয়।’
এদিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতেই ফের হিমঘরে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। জানা যাচ্ছে হিমঘর চত্বরে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন উত্তেজত জনতা।