ধুপগুড়ি : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বালি পাচার বন্ধ করার জন্য। বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য যাতে বন্ধ হয়, তার জন্য বেশ কড়া নিদানও দিয়েছিলেন। রাজ্যের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, স্যান্ড মাইনিং পলিসিরও। কিন্তু সেই সবকে থোড়াই কেয়ার। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পরেও কোনও দেদার চলছিল বালির পাচার। জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি এলাকা থেকে এমনই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছিল বিগত বেশ কিছুদিন ধরে। এখন বর্ষার মরশুমে সরকারি সমস্ত বালির খাদান বন্ধ রয়েছে। আর এরই মধ্যে এলাকার ছোট-বড় বিভিন্ন নদীগুলিতে চলছে অবৈধভাবে বালি তোলার হচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠছিল। শুধু ধূপগুড়িতেই নয়, পাশাপাশি সংলগ্ন বানারহাট, নাগরাকাটা, ময়নাগুড়ি এলাকাতেও একইভাবে অবৈধভাবে বালি তোলার অভিযোগ উঠে আসছিল।
ঘটনার জেরে স্বাভাবিকাভাবেই প্রশ্ন উঠছিল স্থানীয় পুলিশ এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের ভূমিকা নিয়ে। বালি পাচারের অভিযোগ সংক্রান্ত খবর চাউর হতেই এবার নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। এদিন বিকেলে ধূপগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালান ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা। শুরু হয় ধড়পাকড়। পুলিশ এবং স্থানীয় ভূমি রাজস্ব দফতরের যৌথ অভিযান চালিয়ে একটি ট্রাক্টর, চারটি ডাম্পার আটক করা হয়। ধূপগুড়ির গিলান্ডি, ডুডুয়া, বামনী, নাগরাকাটার খেরকাটা, ডায়না, বানারহাটের কালুয়া, রাঙ্গাতি, ময়নাগুড়ির রামশাই, জলঢাকা এবং জলপাইগুড়ির করলা নদী থেকে বেআইনিভাবে বালি ও পাথর পাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠছিল।
দিনের পর দিন এইভাবে সবার চোখের সামনেই বালি ও পাথর বেআইনিভাবে পাচার করা হলেও প্রশাসন কেন চুপ ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল বিভিন্ন মহলে। বক্রোক্তি করতে শুরু করেছিলেন বিরোধী শিবিরের স্থানীয় নেতারাও। প্রশাসনের একাংশও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে অভিযোগ উঠে আসছিল বিরোধীদের দিক থেকে। এরই মধ্যে ধূপগুড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ডাম্পার এবং ট্রাক্টর আটক করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশপ্রেমীরা। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী বর্ষার এই মরশুমে সরকারি বালি খাদানগুলি বন্ধ থাকলেও কীভাবে বালি তোলা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরাও।