জলপাইগুড়ি : জল্পেশ মন্দিরের পাশে মাটি খুঁড়তে গিয়ে উদ্ধার হল আরও এক অনাদি শিবলিঙ্গ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। উত্তরবঙ্গের সবথেকে বড় শিব তীর্থ জল্পেশ মন্দিরে স্কাই ওয়াক নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঘোষণা মতো উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কাজও শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার ওই এলাকায় মাটি খননের মেশিন দিয়ে মাটি খুঁড়তে গিয়ে মাটির বেশ কিছুটা গভীর থেকে উদ্ধার হল আরও একটি প্রাচীন শিবলিঙ্গ। একই সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে লোহার তৈরি একটি ঘণ্টা। পাথর খোদাই করে তৈরি করা প্রায় আড়াই ফুট উচ্চতা ও দু ফুট চওড়া বড় আকারের এই শিবলিঙ্গটির ওজন প্রায় দেড় কুইন্টাল। এটি দেখতে অনেকটা মূল মন্দিরের অনাদি লিঙ্গর মতো।
শিবলিঙ্গ উদ্ধারের পর মন্দিরের পুরোহিতরা এসে ভাল করে পরিষ্কার করেন। এরপর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের গ্রাম থেকে কাতারে কাতারে এসে জড়ো হন কৌতূহলী মানুষ। শিবলিঙ্গ দর্শনের পাশাপাশি পুজোও দেন অনেকে। অত্যন্ত প্রাচীন এই মূর্তি উদ্ধারের পর এলাকাবাসী মূর্তিটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের হাতে তুলে দিয়ে ওই এলাকায় আরও খননকাজ করার দাবি জানিয়েছেন।
খননকাজে যুক্ত ছিলেন শিবু রায় নামে এক ব্যক্তি। তিনি জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৪ টে নাগাদ আর্থ মুভার দিয়ে মাটি খুঁড়ছিলেন তিনি। আচমকাই একটা অদ্ভুত শব্দ হয়। এরপর তিনি লক্ষ্য করেন পাথরের কিছু একটা রয়েছে মাটির নীচে। ভাল করে মাটি সরাতেই বেরিয়ে আসে শিবলিঙ্গ। এরপর পুরোহিতকে নিয়ে ছুটে আসেন মন্দির কমিটির সদস্যরা। পরে মূর্তিটিকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরিন দেব বলেন, “মূল মন্দিরে যে আদি লিঙ্গ রয়েছে এই লিঙ্গটিও দেখতে অনেকটা তার মতো। মন্দিরে যতটা গভীরে শিব লিঙ্গ রয়েছে এই লিঙ্গটিও ঠিক ততটাই গভীর থেকে উদ্ধার হয়েছে। এটি এখন মন্দিরেই থাকবে। পুরোহিতেরা নিয়ম মেনে স্থাপন করে পুজো করবেন।”
ঘটনায় এলাকাবাসী তথা আইনজীবী শিব শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘শিবলিঙ্গটি দেখে মনে হচ্ছে অনেক প্রাচীন। মূল জল্পেশ মন্দিরের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে। তাই আমাদের দাবি এটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হোক। একইসঙ্গে এই এলাকায় আরও খননকাজ চালাক প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ।”
উল্লেখ্য, বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় শিব মন্দির এই জল্পেশ মন্দির। এখানে মন্দিরের মাঝে একটি গর্তে জলের মধ্যে অবস্থান শিবলিঙ্গের। যাকে অনাদি শিবও বলা হয়। আর সেখানে প্রতিনিয়ত বহু মানুষ পুজো দিতে যান। সেখানেই উদ্ধার হল আরও এক শিবলিঙ্গ। তাঁকে ঘিরেই বাড়ছে মানুষের আগ্রহ।