জলপাইগুড়ি: বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে শুক্রবার। কিন্তু সীমান্তে মানুষের ভিড় কমছে না। কাতারে কাতারে মানুষ অপেক্ষায় আছে, যদি ভারতে প্রবেশ করা সম্ভব হয়। গত সোমবার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর থেকে বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে। এরপরই অনেকে অভিযোগ তোলেন, তাঁদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, লুঠ করে নেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় রাজ্যের সীমান্তে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশিদের ভিড়। এবার ছিটমহলবাসীদের সতর্ক করল পুলিশ।
জামাত জঙ্গিরা যাতে ভারতের সীমান্ত দিয়ে কোনও ভাবে প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে বিএসএফ, উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশও। বৃহস্পতিবার রাতে ছিটমহলবাসীদের সঙ্গে দেখা করেন পুলিশ আধিকারিকেরা।
২০১৫ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ের পর ভারতে আসে ৯৬টি পরিবার। তারা এখন ভারতীয়। কিন্তু তাদের অনেক আত্মীয় রয়েছেন বাংলাদেশে। কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের উত্তর বড় হলদিবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের তেঁতুল তলা গ্রামে রাজ্য সরকার তৈরি করেছিল ‘পার্মানেন্ট সেটেলমেন্ট ক্যাম্প’। যেখানে বর্তমানে বসবাস করেন ৬০০-র বেশি মানুষ।
বাংলাদেশে নারকীয় অত্যাচার চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই ভারতে থাকা ছিটমহলবাসীরা সকলেই চাইছেন ওইসব অত্যাচারিত মানুষকে ভারতে নিয়ে আসা হোক।
এমন দাবি জানিয়ে যাতে রাস্তায় নেমে কেউ আন্দোলন না করে, এই মর্মে তাঁদের সতর্ক করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে সেটেলমেন্ট ক্যাম্পে যান কোচবিহার জেলার পুলিশ আধিকারিকেরা। তাঁরা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের বোঝান বাংলাদেশের সমস্যা নিয়ে এই দেশের মধ্যে কী করা যাবে, আর কী করা যাবে না। কার্যত সচেতনতা প্রচার করেন। কেউ আশ্রয় চাইলে আশ্রয় দেওয়া যাবে না বলে সতর্ক করা হয়েছে। ছিটমহলের এক বাসিন্দা বলেন, “আমাদের অনেক আত্মীয় ওখানে আছে। ওরা খুব চিন্তায় আছে। রাতে ঘুমোতে পারছে না। হিন্দুরা অন্তত চলে এলে ভাল হয়। হাসিনা নেই, আর দেখবে কে?”
উল্লেখ্য, ছিটমহল ছাড়াও উত্তরবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা একাধিক জায়গায় দেখা যাচ্ছেন বাংলাদেশিদের ভিড়। অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছে বলে দাবি বিএসএফের। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।