জলপাইগুড়ি: বাংলাদেশে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হতেই ভারতে অনুপ্রবেশের হিড়িক বাড়ছে ক্রমাগত। কখনও ভুয়ো আধার কার্ড বানিয়ে, কখনও আবার কাঁটাতারের ওপাড়েই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে, কখনও বা লুকিয়ে…। তবে সেই অনুপ্রবেশ কড়া হাতে রুখছে বিএসএফ। কিন্তু যে সকল এলাকা কাঁটাতার বিহীন, সেখানে কী হবে? কেন দেওয়া যাচ্ছে না বেড়া? এলাকার বাসিন্দাদের কেউ কেউ বললেন, কাঁটা তার না থাকার কারণে
জলপাইগুড়ি জেলার সদর ব্লক ও রাজগঞ্জ ব্লকে রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত। এই দুই ব্লকের প্রায় ১২০ কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত। সীমান্তের বেশিরভাগ এলাকাতে কাঁটা তারের বেড়া হলেও জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের অধীনে থাকা সাউথ বেরুবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতে মধ্যে প্রায় ১৬ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটা তারের বেড়া না থাকায় সেখানে উদ্বেগ বাড়ছে।
কেন কাঁটা তার দিয়ে ঘেরা যাচ্ছে না?
সাউথ বেরুবারিতে থাকা চিলাহাটি, বড়শশী,নাওতরি দেবত্তর এবং কাজল দিঘি এই চারটি বিতর্কিত জায়গা(অ্যাডভার্স ল্যান্ড)। এখানে প্রায় ৮০০০ মানুষ বসবাস করেন। এদের ভোটার কার্ড,রেশন কার্ড,আধার কার্ড থাকার পরও এরা নিজভূমে পরবাসী। কারণ এরা রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও প্রকল্পের সুবিধা পান না।
জানা গিয়েছে, ১৯৮৯ সালে যখন ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত চিহ্নিত হচ্ছিল তখন জানতে এই জায়গাগুলি বাংলাদেশের ম্যাপে রয়েছে। কিন্তু বাসিন্দারা ভারতীয়। বিচারব্যবস্থা থেকে আইনশৃঙ্খলা সব কিছু রাজ্য সরকার দেখে।
এরপর শুরু হয় স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আন্দোলন। আন্দোলনের ফলে পরবর্তীতে ২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে গিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। সেইসময় ছিটমহল বিনিময় হয়। এবং তার সঙ্গে সাউথ বেরুবারি অঞ্চলে স্থিতাবস্থা বজায় থাকা শুরু হয়। এলাকা চিহ্নিত করে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত চিহ্নিত হয়।
এরপর বিএসএফ এর পক্ষ থেকে ওই এলাকায় কাঁটা তারের বেড়া ও রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য এলাকা চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু ওই জমি গুলির মিউটেশন না হওয়ায় এলাকাবাসীদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করতে পারছে না। ফলে তৈরি করা যাচ্ছে না কাঁটা তারের বেড়া। আর এর ফলে ওই এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ,চোরাচালান সহ বিভিন্ন দুষ্কর্ম হয়ে থাকে বলে দাবি গ্রামবাসীর।
এই মুহূর্তে সবচাইতে বড় চিন্তা অশান্ত বাংলাদেশ। জেল ভেঙে বেরিয়ে পড়েছে জামাত জঙ্গিরা। তারা যে কোনও সময় এই সমস্ত কাঁটা তার বিহীন সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারে অনুমান বাসিন্দাদের। তাই এই এলাকার মানুষ চাইছে দ্রুত সমস্যা সমাধান হোক। তারাও নিশ্চিন্তে থাকুক।
ভারত সীমান্তের শেষ বাড়ির বাসিন্দা সমীর রায় বলেন, “ভারত সীমান্তের শেষ বাড়ির বাসিন্দা সমীর রায় বলেন, “এটা শেষ সীমান্ত। এখান থেকে পাচার হয়। বাংলাদেশ থেকে লোক ঢুকতে পারত না। ওরা খুব সহজেই ঢুকে যেতে পারে। কোনও কাঁটা তার নেই। এখানে তার বন্দি হোক চাই।” গ্রামবাসী দীপু রায় বলেন, “এখানে কাঁটা তার নেই। গরু চুরি হয়। বাংলাদেশ থেকে মানুষ এসে গরু নিয়ে যায়। ছোড়া নিয়ে আসে। ফাঁকা জায়গা থেকে ঢোকে। বিএসএফ আসে। পাহারা দেয়।”