জলপাইগুড়ি: মসজিদের আজান থেকে খোঁজ মিলল জলপাইগুড়ি ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত এক যাত্রীর পরিজনদের। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসমের বাসিন্দা আহত ট্রেন যাত্রী সফিকুল আলির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছেন তাঁর বাড়ির লোকজন। সফিকুল জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি।
শুক্রবার সফিকুল রেলমন্ত্রীকে জানান, তিনি বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। রেলমন্ত্রী সফিকুলের অসমের ধওলা এলাকার বাড়ির ঠিকানা জেনে সেখানে ডাকবিভাগের এক পিওনকে পাঠান। পিওন সফিকুলের পরিবারের খোঁজ না পেয়ে স্থানীয়দের বিষয়টি জানান।
সন্ধ্যায় ধওলার এক মসজিদের আজান থেকে মাইকে সফিকুলের নাম ঘোষণা করে জানানো হয়, তিনি জলপাইগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাতেই কাজ হয়। তাঁর ভাই মইদুল দাদাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে জলপাইগুড়ি রওনা হয়েছেন। গোটা বিষয়টি টুইট করে জানিয়েছে রেল।
আহতের ভাই বলেন, “আমাদের গ্রামে মসজিদে নমাজ পাঠের সময় মাইকিং করা হয়েছিল। এখান থেকে মন্ত্রীই বলে দিয়েছিলেন। আমরা না হলে খোঁজই পেতাম না। কারণ ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগই করা যাচ্ছিল না। ওর কাছে মোবাইল ছিল না। আমার বাড়ি অসমে। এখানে ওখানে মসজিদ মারফতই খবর পেলাম আমরা। মন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।”
আহত সফিকূল বলেন. “কাটিয়ার থেকে উঠেছিলাম। অসমে যাচ্ছি। ট্রেনে দুর্ঘটনায় ভীষণভাবে আহত হয়েছিলাম। কোনওভাবেই বাড়িতে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। মন্ত্রী এসেছিলেন দেখা করতে। তখন মন্ত্রীকেই বিষয়টা জানাই। তারপর শুনি নমাজে ঘোষণা করা হয়। ভাই এসেছে এখানে আমাকে নিতে।”
এদিকে, জেলা প্রশাসন সূত্রে মিলেছে একটা ভালো খবরও। জলপাইগুড়ি ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি থাকা যাত্রীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে গতকাল রাতে চার যাত্রীকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁরা হাসপাতালে থাকতে চাইছিলেন না। বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন। তাই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শারীরিক অবস্থা ভাল থাকলে আজও কয়েকজনকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। অন্যদিকে, ময়নাগুড়ি হাসপাতাল ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা যাত্রীদেরও শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।
আহতদের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে সন্তুষ্ট রেলমন্ত্রী স্বয়ং। জলপাইগুড়ি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আহতদের দেখার পর তিনি বলেন, “দুটি হাসপাতালের রোগীদের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁরা বলছেন চিকিৎসায় পরিষেবায় সন্তুষ্ট। চিকিৎসকরা ভালোভাবে কাজ করছেন। আহতরা তাঁদের ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আর যাঁদের পরিবারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। তাদের সঙ্গে ডাকের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হবে। ডাক অফিস ও পঞ্চায়েত অফিসের নাম জানা হয়েছে।”
আরও পড়ুন: Panskura Clash: পান ‘চুরি’ নিয়ে গ্রামের ‘প্রেস্টিজ ফাইট’! চলল বাঁশ-লোহার রড নিয়ে উন্মত্ত দাপাদাপি