জলপাইগুড়ি: শিশুমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত জলপাইগুড়ি। সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল চত্বরে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসককে দায়ী করে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখায় মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরা।
জানা গিয়েছে, ধূপগুড়ি ডাউকিমারি এলাকার বাসিন্দা অপর্ণা দাস। সন্তান সম্ভবা এই মহিলা জলপাইগুড়ি মাদার চাইল্ড হাবে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল তিনি সন্তান প্রসব করেন। প্রসবের ঠিক কয়েকঘণ্টার পরই শিশুটি মারা যায়।
এরপর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার দুপুরে উত্তাল হয়ে ওঠে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগ চত্বর। মৃত শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সঠিক ভাবে চিকিৎসা হয়নি।
এই ঘটনায় মৃত শিশুটি কাকার রণ্টু দাসের অভিযোগ, ” আমার বৌদি সুস্থ ছিলেন। তিনি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। প্রসবের পর সন্তানও সুস্থ ছিল। কিন্তু হঠাৎ কী হল জানি না। কয়েক ঘণ্টা পর চিকিৎসক এসে আমাদের বলেন যে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। শিলিগুড়িতে স্থানান্তরিত করতে হবে। আমরা তার জন্যও প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু হাসপাতলের পক্ষ থেকে বলা হল আমার শিশুকে অন্য হাসপাতলে নিতে হলে বন্ডে সই করতে হবে। আমরা সেই সবও করলাম। এরপরও ওরা বাচ্চাটিকে ছাড়ল না। শেষে দেখতেও এলো না। পরে জানাল যে বাচ্চাটি মারা গিয়েছে। বৌদির অবস্থাও ভালো নেই।” রন্টু দাস সাফ-সাফ জানায় তার চিকিৎসার গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়েছে সদ্যোজাতর।
অন্যদিকে জলপাইগুড়ির পাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মঞ্জু রায়ের অভিযোগ, তাঁর পুত্রবধূ মধুমিতা রায় তিন কেজির বেশি ওজনের পুত্র সন্তান প্রসব করেছিল। তিনি কোলেও নিয়েছিলেন। কিন্তু রাত থেকে শিশুটিকে দেখতেই দিচ্ছেনা নার্সরা। শিশুটি কেমন আছে তাও বলছেন না তারা। তার অভিযোগ তাদের শিশু কি নিখোঁজ?
এই ঘটনায় জলপাইগুড়ি বিধায়ক তথা সদর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডাক্তার প্রদীপ কুমার বর্মা বলেন, “আমিও অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ নেব। বিষয়টি নিয়ে আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর সঙ্গে অবশ্যই কথা বলবো।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ২২ তারিখে চিকিৎসার গাফলতিতে গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে। হাসপাতালেই চলে প্রসূতির পরিবারের সদস্যদের ধর্না ও বিক্ষোভ। অভিযুক্ত চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিলের দাবি তোলেন পরিবারের সদস্যরা। পরে হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আলিপুরদুয়ার জংশন ভোলারডাবড়ির এক প্রসূতি ২০ ডিসেম্বর প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ২০ তারিখে ভর্তি করা হলেও, কোনও চিকিৎসক তাঁকে দেখেননি। এমনকি ওই প্রসূতির আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার কথাও বলেননি কোনও চিকিৎসক। ফলে সেটাও করানো হয়নি।এই ঘটনার পর চরম উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতালে। পরিবারের লোকজন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের শাস্তির দাবিতে হাসপাতালে বিক্ষোভে সামিল হন।